নির্বাচন বিষয়ে টিআইবির প্রতিবেদন ভিত্তিহীন: সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন ভিত্তিহীন।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে কমিশনে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সিইসি।
নির্বাচন বিষয়ে টিআইবি যে মন্তব্য করেছে, তা অসৌজন্যমূলক উল্লেখ করে কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘ওই প্রতিবেদন আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি, কারণ মাঠ পর্যায় থেকে আমরা এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। এমনকি মিডিয়া থেকেও অভিযোগ পাইনি।’
গত মঙ্গলবার টিআইবি সংসদ নির্বাচন নিয়ে গবেষণার প্রাথমিক ফল প্রকাশ করে সংবাদ সম্মেলনে জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৪৭টি আসনের প্রতিটিতে এক বা একাধিক ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ৪১ আসনে পড়েছে জাল ভোট। আর ৩৩ আসনে আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা হয়েছে। এছাড়া বুথ দখল করে প্রকাশ্যে সিল মেরে জাল ভোট ৩০ আসনে, পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া ২৯ আসনে, ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া ২৬ আসনে, ভোটারদের জোর করে নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করা ২৬ আসনে, ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া ২২ আসনে, আগ্রহী ভোটারদের হুমকি দিয়ে তাড়ানো ২১ আসনে, ব্যালট বাক্স আগে থেকে ভরে রাখা ২০ আসনে, প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থীর নেতাকর্মীদের মারধর করা ১১ আসনে। এমন তথ্য প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতিক্রিয়ায় বলা হয় টিআইবির প্রতিবেদন মনগড়া, পূর্বনির্ধারিত।
সিইসি বলেন, শুধু গণমাধ্যম, আমাদের কর্মকর্তা, নির্বাচনী তদন্ত কমিটি, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছি। এমন হয়নি। টিআইবি যে রকম বলেছে, তার সত্যতা নেই। আপনাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, এটা অসৌজন্যমূলক, লজ্জাকর বিষয়। এ কথাগুলো এভাবে বলা ঠিক হয়নি।
ইটিআই মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুকের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে সংস্থাটির পরিচালক ফরহাদ হোসেন, বেলায়েত হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যালোচনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। এতে দাবি করা হয়, ৩০০ আসনের মধ্যে ৫০টি আসন দৈবচয়নের ভিত্তিতে নির্ধারণ করেছিল টিআইবি। পর্যালোচনায় অন্তর্ভুক্ত আসনগুলোয় আওয়ামী লীগ ৪০, জাতীয় পার্টি ছয়, বিএনপি এক, গণফোরাম দুই এবং অন্যান্য দল একটি আসনে জয়ী হয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও তা মূলত আংশিক অংশগ্রহণমূলক হয়েছে বলে দাবি করেছে টিআইবি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আচরণবিধি ব্যাপকভাবে লঙ্ঘনের অভিযোগ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।