মাসুম বিল্লাহ, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী): সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকার করছে রাঙ্গাবালীর জেলেরা। বিশেষ করে উপজেলার মৌডুবী, রাঙ্গাবালী, বড়বাইশদিয়া-সহ কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েকশ জেলে অবৈধভাবে ইলিশ শিকার করছে। অবৈধভাবে চলছে বরফ কলও। নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ইলিশ শিকার, পরিবহন ও বিক্রি অবৈধ থাকলেও প্রকাশ্যে চলছে বাণিজ্য।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইলিশের ভরা মৌসুমের মতোই ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। প্রকাশ্য দিবালোকে জালভর্তি ট্রলার নিয়ে যাচ্ছেন সাগরে। স্থানীয় মৌডুবী ইউনিয়নের তিন ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে চলছে অবৈধভাবে ইলিশ শিকার। স্থানীয় প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি হয়ে অবৈধ মৎস্য শিকারের সঙ্গে জড়িত থাকায় ভয়ে মুখ খুলছে না কেউ। এদিকে সাগর থেকে ধরে আনা বেশিরভাগ ইলিশ বরফজাত হয়ে চলে যাচ্ছে শহরে। বিক্রি হচ্ছে স্থানীয় বাজারেও। কোস্টগার্ড, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের সামনে ইলিশের অবৈধ বাণিজ্য চললেও কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে জানা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মৌডুবী ইউনিয়নের নিচকাটা এলাকায় মো. খলিলের মালিকানায় একটি বরফ কল থেকে বরফ সংগ্রহ করেন জেলেরা। তাছাড়া নিষেধাজ্ঞা চলাকালে ইলিশ ধরার জন্য বিভিন্ন দপ্তরে চাঁদা দিয়ে মাছ ধরার মৌখিক অনুমতি নিতে হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলে নিশ্চিত করে বলেন, ‘মৎস্য কর্মকর্তা, কোস্টগার্ডসহ কর্তৃপক্ষের লোকজন অবগত আছেন। প্রতিটা বোট থেকে কমপক্ষে পাঁচ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার পর্যন্ত চাঁদা নেয়া হয়েছে।’
আব্দুর রহিম নামে স্থানীয় সমাজসেবক বলেন, অবৈধভাবে ইলিশ শিকারের বিষয়টি প্রশাসন জানে, তবুও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেই।
অভিযুক্ত বরফ কল মালিক খলিল বলেন, ‘শুধু আমার বরফ কলই নয়, অনেকে গলাচিপা থেকে স্টিলবডি বোটে করে বরফ নিয়ে আসে।’ ফেরদৌস গাজী, আনসার ও হানজালা পানপট্টি-গলাচিপা থেকে বরফ এনে বিক্রি করেন বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এ বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আলী আহমেদ আকন্দ বলেন, ‘আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যেও কিছু জেলে চুরি করে সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারে। তবে ঘুষ বা মাশওয়ারা নিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকারের অনুমতির বিষয়টি আমার জানা নেই।’ এছাড়া কোস্ট গার্ডের সহযোগিতায় অভিযানের তৎপড়তা বৃদ্ধি করা হবে বলেও তিনি জানান।