শেয়ার বিজ ডেস্ক:‘বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যকার বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপ গতকাল ঢাকা চেম্বার মিলয়ানতনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। দ্য কনফেডারেশন অব নেপালিজ ইন্ডাস্ট্রিজের (সিএনআই) সভাপতি বিষ্ণু কুমার আগারওয়ালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফররত ১৩ সদস্যের প্রতিনিধিদলের সম্মানে ডিসিসিআই এ সংলাপের আয়োজন করে।
দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণকে প্রাধান্য দেয়ার ওপর জোরারোপ করে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ ও নেপালের এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটবে। এ অবস্থায় দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে ‘অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ)’ স্বাক্ষরের বিষয়টি বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। নেপাল সরকারের অনুমোদন পেলে শিগগিরই তা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাক্ষর করা হবে। বাণিজ্য সচিব জানান, বাংলাদেশের ভোক্তাশ্রেণির সংখ্যা অত্যন্ত বেশি এবং বিশেষ করে ভোগ্যপণ্য উৎপাদন খাতে নেপালের উদ্যোক্তারা এদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আজকের (গতকাল) অনুষ্ঠানে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে দুদেশের উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হবে।
প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও নেপালের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৭৩ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে চার দশমিক ৮১ এবং ৬৮ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ওষুধ, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, পাটপণ্য, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি খাত বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ করে তিনি নেপালের প্রতিনিধিদলকে এসব খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
সিএনআইয়ের সভাপতি বিষ্ণু কুমার আগারওয়াল বলেন, তার দেশ সেবা খাতনির্ভর অর্থনীতি হতে উৎপাদন খাতনির্ভর অর্থনীতির দিকে ধাবিত হচ্ছে এবং বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ-জ্বালানি, অবকাঠামো, ম্যানুফ্যাকচারিং, তথ্যপ্রযুক্তি প্রভৃতি খাতে নেপালে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে তিনি ঢাকা চেম্বার থেকে নেপালে প্রতিনিধিদল পাঠানোর জন্য আহ্বান জানান।
সিএনআইয়ের সহসভাপতি নির্ভানা চৌধুরী জানান, তার প্রতিষ্ঠান ‘চৌধুরী গ্রুপ’ এরই মধ্যে বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্য খাতে বিনিয়োগ করেছে এবং বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে একটি উৎকৃষ্ট গন্তব্যস্থল হিসেবে তিনি আখ্যায়িত করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপাল দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স কুমার রায় বলেন, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে বেশ শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে তিনি দুদেশের বেসরকারি খাতে উদ্যোক্তাদের একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান। সমুদ্র অর্থনীতি ও হাইটেক শিল্প উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বলে অভিহিত করে রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ শিগগিরই এ পরিকল্পনার সুফল ভোগ করবে।
অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বার ও কনফেডারেশন অব নেপালিজ ইন্ডাস্ট্রিজের (সিএনআই) মধ্যকার সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এতে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান ও সিএনআইয়ের সভাপতি বিষ্ণু কুমার আগারওয়াল নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে স্বাক্ষর করেন।