প্রতিনিধি, নোবিপ্রবি: নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ৪৮৫ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ফেসবুক অ্যাকাউন্টের তথ্য ফাঁস হয়েছে। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া তালিকায় বাংলাদেশের রয়েছে ৩৮ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারী।
তথ্য ফাঁস হওয়া তালিকায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট পরিচয় প্রোফাইলে উল্লেখ রয়েছে, এমন ৪৮৫ জন ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছেন। হ্যাকিংয়ের শিকার এই ব্যবহারকারীদের নাম পাওয়া গেছে ঢাকার বেসরকারি ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলোজি বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর সংগ্রহ করা তালিকায়।
ওই তালিকা অনুযায়ী নোবিপ্রবিতে অধ্যয়নরত ও কর্মরতদের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এসব তথ্যের মধ্যে রয়েছে, ফেসবুক ব্যবহারকারীর ফোন নম্বর, ফেসবুক আইডি, পুরো নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, প্রোফাইল ও কিছু ক্ষেত্রে ই-মেইল ঠিকানা। এই তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন।
এতে তথ্য ফাঁস হওয়া ব্যবহারকারীদের প্রাইভেসি লঙ্ঘন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নোবিপ্রবি ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আবিদুর রহমান। তিনি বলেন, এতে তাদের নানাভাবে হয়রানি ও হেনস্থা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিভাগের শিক্ষক সালাউদ্দিন পাঠান বলেন, এতে ফাঁস হওয়া নম্বরগুলোর সংশ্লিষ্ট সব নিরাপত্তায় হস্তক্ষেপ করার সুযোগ রয়েছে চক্রটির। এ-সংক্রান্ত সব ক্ষেত্রে তথ্য ফাঁস হওয়া ব্যক্তিদের ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া কোনো অপরাধী চক্র ওই নম্বর দিয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় ব্যবহারকারীর অন্য ব্যক্তিগত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে ক্ষতি করতে পারবে। এতে যে কাউকে লক্ষ্য করে তার সব তথ্য নিয়ে আলাদা প্রোফাইল তৈরি করে তা অন্য জায়গায় ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এতে তথ্য ফাঁস হওয়া ব্যক্তি নিজেকে রক্ষা করতে প্রোফাইলে থাকা নম্বর যে কোনো সিকিউরিটি থেকে সরিয়ে সেসব জায়গায় নতুন নাম্বার ব্যবহার করা উচিত। এছাড়া ক্ষতি বয়ে আনতে পারে প্রোফাইল থেকে এমন সব তথ্য সরিয়ে সেগুলো অন্য কোথাও ব্যবহারে সচেতন হতে হবে।
বিশ্বের ১০৬ দেশের ৫৩ কোটি ৩০ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর নাম রয়েছে হ্যাকিংয়ের তালিকায়। এসব তথ্য প্রকাশ করে একটি লো-লেভেল হ্যাকিং প্ল্যাটফর্ম প্রযুক্তি বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে। এতে ব্যবহারকারীর ফোন নম্বরসহ অ্যাকাউন্টে থাকা ব্যক্তিগত সব তথ্য ফাঁস করেছে চক্রটি। অনেকটা বিনা খরচে এসব তথ্য অনলাইনে বিক্রি করা হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে।
১০৬ দেশের মধ্যে এতে সবচেয়ে বেশি তিন কোটি ২০ লাখ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের। রয়েছে যুক্তরাজ্যের এক কোটি ১০ লাখ ও ভারতের ৬০ লাখ ব্যবহারকারীর গোপনীয় তথ্য।
তবে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অফিশিয়াল মন্তব্য করেনি। এর আগে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকবার বিশ্বের বৃহত্তম এ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্য ফাঁস হয়েছে।
