প্রতিনিধি, নোয়াখালী: ধান, চালসহ ১৭ পণ্য পরিবহন ও সংরক্ষণে পাটের ব্যাগের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হলেও নোয়াখালীর ব্যবসায়ীরা এ আইন মানছেন না। ফলে জেলার সর্বত্রই অবাধে চলছে প্লাস্টিকের অবাধ কারবার। ফলে পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে অনেকে মনে করছেন।
জানা গেছে, ধান, চাল, গম, ভুট্টা, সার, চিনি, মরিচ, হলুদ, পেঁয়াজ, আদা, রসুন, ডাল, ধনে, আলু, আটা, ময়দা ও তুষ-খুদ-কুঁড়া মোড়কজাত করতে পাটজাত পণ্য ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু জেলার ব্যবসায়ীরা আইনের তোয়াক্কা না করে অবাধে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করে যাচ্ছেন। মাঝেমধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এতে হাটবাজার ও চালের দোকানে কিছুটা পরিবর্তন আসে। কিন্তু করোনাকালে তা চোখে পড়েনি। অভিযান থেমে গেলে আবারও পলিব্যাগ ও প্লাস্টিক বস্তায় ছেয়ে যায় নোয়াখালীর হাটবাজার।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চালের দাম বাড়ায় কয়েক মাস ধরে বিদেশ থেকে চাল রপ্তানির ক্ষেত্রে পাটের বস্তার ব্যবহার কিছুটা শিথিল করা হয়। ফলে বর্তমান বাজারে ঢালাওভাবে বেড়ে গেছে পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার। জেলার সোনাপুর, দত্তের হাট, মাইজদী পৌরবাজার, মাইজদী বাজার, সেনবাগের কানকির হাট, ছমির মুন্সীরহাট, কোম্পানীগঞ্জের বসুর হাট, কবিরহাটের চাপরাশির হাট, সদরের খলিফার হাট, ওদারহাট, চরবাটা খাসের হাট, বেগমগঞ্জের চৌমুহনী, রাজগঞ্জ বাজার, ছয়ানী বাজার, বাংলাবাজার, চাটখিলের সোমপাড়া, খিলপাড়া, সোনাইমুড়িসহ জেলার সবকটি চালের বাজারে প্লাস্টিকের বস্তা ব্যবহার করা হচ্ছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।
জেলার সবচেয়ে বড় বাজার চৌমুহনী বাজারের চালের এক আড়তদার জানান, কয়েক মাস আগে বাজারে চালের দাম কমানোর জন্য প্লাস্টিক বস্তা ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়। তবে এ সুবিধা সাধারণ মানুষ মোটেও পায়নি। চালের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বস্তাপ্রতি দাম ৩৫-৪০ টাকা কম রেখেছেন, কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীরা চালের দামে কম না রেখে বরং প্রতি কেজি চাল আগের মূল্যেই বিক্রি করছেন। মাঝে প্লাস্টিকের বস্তার ব্যবহারও বেড়ে গেছে।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিনিয়র কেমিস্ট মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার সরকারিভাবে নিষিদ্ধ। এর বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অনেকটা নিয়মিত। বিশেষ করে পলিথিনের ব্যবহার কৃষিসহ যে কোনো পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আমরা এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করব।’
নোয়াখালীর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. খোরশেদ আলম বলেন, ‘পলিথিন জাতীয় প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে করতে অতি সহসায় আমাদের ভ্রাম্যমাণ কোর্ট পরিচালনা করার ইচ্ছে আছে। তারপরেও কোথাও কোনো দোকানির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানালে আমরা ব্যবস্থা নেব।’