Print Date & Time : 6 August 2025 Wednesday 6:27 pm

নোয়াখালীতে রোগীদের জিম্মি করে বাণিজ্যের অভিযোগ

আকাশ মো. জসিম, নোয়াখালী : নোয়াখালীতে সাধারণ রোগীদের জিম্মি করে চিকিৎসার নামে বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের বিরুদ্ধে। নানামুখী প্রতারণার জালে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হলেও রহস্যজনক কারণে এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধেও। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নোয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা. মমিনুল হক।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন মমিনুল হক বলেন, কোনো বেসরকারি হাসপাতাল বা ক্লিনিকের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা স্বাচিপের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমাদের তেমন কিছু করার থাকে না। তিনি বলেন, গত ক’দিন আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত এসব হাসপাতালের বেশকিছু কথিত চেম্বার চিকিৎসককে জেল-জরিমানা করেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকলেও এমবিবিএস পাসের চিকিৎসককে বিশেষজ্ঞ বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া অনেক ক্লিনিকে চিকিৎসক নামের প্যাডও পাল্টে যায় রোগী অনুযায়ী। নানারকমের রহস্যজনক ডিগ্রির পাশে নানা রোগের বিশেষজ্ঞ বলে দাবি করা হয় সেসব প্যাডে।

অভিযোগ রয়েছে, নোয়াখালীর প্রায় সব বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং চিকিৎসকের একমাত্র রোজগারই অবৈধ পথ ও পন্থায়। এসব ‘কারখানা’র চিকিৎসকরা কোনো রোগীর চিকিৎসাপত্র দেওয়ার আগেই ছয়-সাত ধরনের গৎবাঁধা টেস্ট (পরীক্ষা) দিয়ে থাকেন।

একপর্যায়ে রোগী সবগুলো টেস্ট করতে অপারগতা প্রকাশ করলে সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হাতে নানাভাবে নিগৃহীত ও নির্যাতিত হওয়ার অভিযোগও করেছেন একাধিক ভুক্তভোগী। ভুক্তভোগী এক রোগী জানান, প্রতারণামূলকভাবে সব টেস্টের নামে টাকা আদায় করা হলেও করানো হয় মাত্র এক-দুটি।

নাহিদা আকতার নামে এক রোগী জানান, একটি ক্লিনিকে মাত্র দুটি টেস্ট করেই তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ছয় হাজার টাকা। তিনি অন্যান্য টেস্টের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, অন্যগুলো নরমাল আছে।

এ বিষয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালক অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করলেও তার হাসপাতালে এসব হয় না বলে জানান। এছাড়া জেলার প্রায় হাসপাতালেই টেস্ট করার কাজে ব্যবহƒত যন্ত্রপাতির ত্রুটির কথাও জানান অনেকে।

জানা যায়, ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রপাতির কারণে রোগীর সঠিক রোগ নিরূপণ সম্ভব হয় না। ফলে সহজ-সরল রোগীদের অনেক সময় জটিল রোগীর নাম-ঠিকানায় বসানো হয়। যে কারণে ভড়কে গিয়ে দেশ-বিদেশে আর্থিক, শারীরিক ও মানসিক হয়রানির শিকার হয় সাধারণ মানুষ।