নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে সব সূচক কমার মধ্য দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সূচকের পতনেও দুই খাতের শেয়ারদর বেড়েছে। এদিন বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল কাগজ ও মুদ্রণ খাতের শেয়ারে। এ খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এরপর দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাট খাতের শেয়ার।
অপরদিকে শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ারে। ফলে খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। এছাড়া পাঁচ খাত ছাড়া বাকি সব খাতে শেয়ারদর কমেছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল কাগজ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ২ দশমিক ৭০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৬টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২টির দর বেড়েছে এবং ৩টির দর কমেছে ও ১টি কোম্পানির শেয়ারদর অপরিবর্তিত ছিল। এর পরের অবস্থানে থাকা পাট খাতের শেয়ারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ। এদিন পাট খাতে মোট ৩টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২টি কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে এবং ১টির দর কমেছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ২টির দর বেড়েছে এবং ১টির দর কমেছে। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, প্রকৌশলী, বস্ত্র, সিমেন্ট ও মিউচুয়াল ফান্ড খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধি বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় ভ্রমণ খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ২ শতাংশ। এর পরের স্থানে থাকা সেবা ও আবাসন খাতে শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। ১ দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল সাধারণ বিমা খাত।
অপরদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে আইটি খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৩ দশমিক ৭০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা কাগজ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হওয়া খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইর লেনদেন কমে ৬শ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। আর সিএসইর লেনদেন কমে ১৪ কোটি টাকার ঘরে এসেছে। ডিএসইতে ১৩৯টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। ৩৩টির বেড়েছে। সিএসইতে ৬৩টি কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। ১৯টির বেড়েছে। এদিন শেয়ার ক্রয়ের চেয়ে বিক্রির প্রবণতা বেশি ছিল। ফলে বিক্রির চাপে পতন হয় পুঁজিবাজারে।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্র মতে, ডিএসইতে ৬০৮ কোটি ৪৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ৭৪৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১২ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৮৩ দশমিক ৩০ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৬ দশমিক ২১ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৩ দশমিক শূন্য ৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২৩৫ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৭১ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৬টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৩৩টি এবং কমেছে ১৩৯টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৫৪টির।
অপরদিকে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ২১ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবসে ২০ কোটি ৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৩৯টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ১৯টির, কমেছে ৬৩টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৫৬টির। সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩৬ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৩৫ দশমিক ২৯ পয়েন্টে।