নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে চলমান ধারাবাহিক দরপতনের মধ্যেও তালিকাভুক্ত ১১টি কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা মে’২৫ মাসে নিজেদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করেছেন। এই ঘটনা বাজার সম্পর্কে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে এবং আস্থার সংকট আরও বাড়িয়ে তুলেছে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও আমার স্টক সূত্র জানিয়েছে, মে মাসে তালিকাভুক্ত ১১ কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা তাদের শেয়ার বিক্রি করেছেন। কোম্পানিগুলো হলো- অ্যাপেক্স ট্যানারি, ব্যাংক এশিয়া, লাফার্জহোলসিম, প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, যমুনা অয়েল, এইচআর টেক্সটাইল, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক এবং পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স।
অ্যাপেক্স ট্যানারি
৩০ এপ্রিল এই কোম্পানিতে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩৬.০৮ শতাংশ। মে মাসে তারা ১.২৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন, ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪.৮১ শতাংশে। এই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ১.৫৫ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন, তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ০.২৮ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন।
ব্যাংক এশিয়া
কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৫২.৩৭ শতাংশ। মে মাসে তারা ০.৯৪ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন, ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ৫১.৪৩ শতাংশে। এই সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ০.৫৮ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ০.৩৬ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন।
বাংলাদেশ ফাইন্যান্সStock market education
এই কোম্পানিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩০.৫১ শতাংশ। মে মাসে তারা ১.৬২ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন, ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ১৮.৮৯ শতাংশে। লক্ষণীয়ভাবে, আলোচ্য সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ৫৪.১৫ শতাংশ থেকে কমে ৫৩.৬২ শতাংশ হয়েছে, কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ১২.১৫ শতাংশ শেয়ার কিনে তাদের ধারণকৃত শেয়ার ২৭.৪৯ শতাংশে উন্নীত করেছেন।
এইচআর টেক্সটাইল
কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩৯.১১ শতাংশ। মে মাসে তারা ৪.৫৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন, ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪.৫৪ শতাংশে। এই সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ১.১৯ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৩.৩৮ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন।
যমুনা অয়েল
কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ২.৯০ শতাংশ। মে মাসে তারা তাদের হাতে থাকা সবগুলো শেয়ার বিক্রি করেছেন। ফলে ৩১ মে তাদের হাতে কোনো শেয়ার নেই। তবে কোম্পানিটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এতে সরকারের শেয়ার রয়েছে ৬০.০৮ শেয়ার অপরিবর্তিত রয়েছে। কেবল সরকার মনোনীত পরিচালকদের শেয়ার ২.৯০ শতাংশ বিক্রি করা হয়েছে। আলোচ্য সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ২.৫৬ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ০.২৬ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ০.০৮ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন।
লাফার্জহোলসিম
কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৬৩.৮৩ শতাংশ। মে মাসে তারা ০.১৮ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন, ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার দাঁড়িয়েছে ৬৩.৬৫ শতাংশে। এই সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ০.২৯ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন, তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ০.১০ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ০.০১ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন।
এনসিসি ব্যাংক
কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩৭.২৮ শতাংশ। মে মাসে তারা ০.২৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন, ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার দাঁড়িয়েছে ৩৭.০১ শতাংশে। এই সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ০.৭৫ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন, তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ০.৪৫ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ০.০৩ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন।
প্রাইম ব্যাংক
কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৪০.৩৫ শতাংশ। মে মাসে তারা ২ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন, ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার দাঁড়িয়েছে ৩৮.৩৫ শতাংশে। এই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ১.৮ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ০.২৫ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন, তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ০.০৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন।
পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স
কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৪৫.৬২ শতাংশ। মে মাসে তারা ৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন। ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ৩৮.৬২ শতাংশে। অন্যদিকে, এই সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ২.৯৩ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৪.০৭ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন।
পূবালী ব্যাংক
কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩১.৪৯ শতাংশ। মে মাসে তারা ১.২৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন। ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার দাঁড়িয়েছে ৩০.২২ শতাংশে। এই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ১.৬৪ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন, তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ০.৩৭ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
কোম্পানিটিতে ৩০ এপ্রিল উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার ছিল ৩৪.৯০ শতাংশ। মে মাসে তারা ২ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন, ফলে ৩১ মে তাদের শেয়ার কমে দাঁড়িয়েছে ৩২.৯০ শতাংশে। এই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ০.৫৬ শতাংশ শেয়ার কিনেছেন, তবে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ২.১২ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ০.০১ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করেছেন।
উল্লেখ্য, ৩০ এপ্রিল সরকারের কাছে কোনো শেয়ার ছিল না। তবে মে মাসে সরকার কোম্পানিটিতে নতুন করে ৩.৫৮ শতাংশ শেয়ার কিনেছে।