Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 2:17 am

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে ৬৪ জেলায় হবে রেপ্লিকেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পদ্মা নদীর ওপর বহুল কাক্সিক্ষত স্বপ্নের বহুমুখী পদ্মা সেতুর উদ্বোধন জাঁকজমকপূর্ণ হবে বলে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের সময় ৬৪ জেলায় একসঙ্গে এর রেপ্লিকেশন করা হবে। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

আগামী ২৫ জুন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন। এরই মধ্যে পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি ‘পদ্মা সেতু’ নামকরণ করে গেজেট জারি করেছে সরকার। রোববার এ-সংক্রান্ত গেজেট জারি হয়।

এর এক দিন পরই মন্ত্রিসভা বৈঠকে পদ্মা সেতু বিষয়ে কী ধরনের আলোচনা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ইনশাআল্লাহ সুপার গর্জিয়াস হবে। ৬৪ জেলায় একসঙ্গে রেপ্লিকেশন হবে। এখানে অরিজিনাল উদ্বোধন হবে, দেশের অন্য সব জায়গায় হবে রেপ্লিকেশন।

জানা গেছে, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনে সেতু বিভাগ বেশ কিছু উপ-কমিটি গঠন করেছে। বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে সেতুর উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনের দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনসভায় ভাষণ দেবেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য, ক‚টনীতিকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।

এদিকে পদ্মা সেতুর নাম চ‚ড়ান্ত করে সেতু বিভাগের উন্নয়ন অধিশাখা থেকে জারি করা গেজেটে বলা হয়েছে, সেতু বিভাগের অধীন বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্প’-এর আওতায় মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া এবং শরীয়তপুর জেলার জাজিরা প্রান্ত সংযোগকারী পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি সরকার ‘পদ্মা সেতু’ নামে নামকরণ করল।

রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সেতু বিভাগের উপ-সচিব মো. আবুল হাসানের সই করা গেজেটে আরও বলা হয়েছে, জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। গত ২৪ মে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদ্মা নদীর নামেই সেতুর নামকরণ করা হবে।

গতকাল সকালে সেনা সদর দপ্তরের মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে ‘আর্মি সিলেকশন বোর্ড, ২০২২’-এর বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২৫ জুন যান চলাচলের জন্য পদ্মা সেতু খুলে দেয়া হবে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সারাবিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা বাড়িয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, জনৈক ব্যক্তি পদ্মা সেতু প্রকল্পে মিথ্যা দুর্নীতির অভিযোগ আনায় কোনো বোর্ড মিটিং না করেই বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। যদিও পরে ওই অভিযোগ ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়। পদ্মা নদীতে নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুর নির্মাণকাজ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে বসে প্রথম স্প্যান। মাঝে ২২টি খুঁটির নিচে নরম মাটি পাওয়া গেলে নকশা সংশোধনের প্রয়োজন হয়। তাতে বাড়তি সময় লাগে প্রায় এক বছর। বৈশ্বিক মহামারি কভিডের বিরূপ প্রেক্ষাপটে এবং বন্যার প্রভাবে সেতু নির্মাণের কাজে ধীরগতি আসে। সব বাধা পেরিয়ে ওই বছরের অক্টোবরে বসানো হয় সেতুর ৩২তম স্প্যান। এরপর বাকি স্প্যানগুলো বসানোর কাজ শেষ হয় দ্রæত সময়ের মধ্যে। এর ঠিক পাঁচ বছরের মাথায় পূর্ণ আকৃতি পায় স্বপ্নের সেতু, যুক্ত হয় পদ্মার দুই পাড়।