পদ্মা সেতু প্রকল্পের চীনা কর্মকর্তাদের জন্য ফ্লাইট চালুর দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের মেগা প্রকল্পের কাজ সরকার আরোপিত কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও চলমান। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৩০ ব্যক্তিকে প্রতি সপ্তাহে চীন ও বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করতে হয়। তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রকল্প পরিচালক, সুরক্ষা ও মান যাচাই এবং কারিগরি নির্মাণ কর্মকর্তাদের মতো মুখ্যপদে থাকা ব্যক্তিরা। তাই তাদের সুবিধায় চীনের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর দাবি জানিয়েছে চায়না রেলওয়ে গ্রুপ।

গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানায় প্রতিষ্ঠানটি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প চীন ও বাংলাদেশের মধ্যকার গুরুত্বপূর্ণ একটি যৌথ প্রকল্প। বর্তমানে পুরোদমে চলছে এ প্রকল্পের কাজ। তাই প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রায়ই ভ্রমণ করতে হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারির কারণে প্রকল্প পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা ও সাইটের শ্রম ব্যবস্থাপনা ক্রমাগত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আর এখন ফ্লাইট স্থগিতাদেশ নীতি প্রকল্পের অগ্রগতিকে আরও বাধাগ্রস্ত করছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যদি চীন থেকে নির্মাণ স্থানে সময়মতো ফিরতে না পারেন, তবে বেশ কয়েকটি কাজের প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়বে। কিছু কাজ বাধ্য হয়ে স্থগিত করতে হবে। এটি নির্মাণের অগ্রগতিতে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

এতে আরও বলা হয়,  প্রতিবেদন অনুসারে, বৈশ্বিক মহামারি থাকা সত্ত্বেও চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যসহ অন্য কার্যক্রম বেড়েছে। বর্তমানে চীনে বৈশ্বিক মহামারি পরিস্থিতি কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। চীন থেকে যেসব কর্মীরা বাংলাদেশে এসেছেন তারা সবাই দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন। তাই তারা বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে ঝুঁকি তৈরি করবেন না। একই সঙ্গে মুখ্যপদে থাকা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সরকার যদি ভবিষ্যতে বাংলাদেশে ফিরে আসা চীনা কর্মীদের জন্য নির্ধারিত স্থানে সেন্ট্রালাইজড কোয়ারেন্টাইনের নীতিমালা তৈরি করে, তবে তারা আর বাংলাদেশে আসতে চাইবেন না। এ বিষয়গুলো প্রকল্পের অগ্রগতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

বাংলাদেশে মহামারি পরিস্থিতি অবনতির ফলে বিমান চলাচল স্থগিত করার কারণে চট্টগ্রামে প্রকল্পের জন্য অর্ডারকৃত ইস্পাত বিম, ইস্পাত বার ও ভূ-প্রযুক্তিগত সামগ্রী বহনকারী নৌযানের জট দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এছাড়া উচ্চ পোর্ট ডেমারেজ ফি, অতিরিক্ত পোর্ট স্টোরেজ চার্জ ও জ্বালানি চার্জ প্রকল্পটির মারাত্মক আর্থিক ক্ষতিসাধন করেছে। ইস্পাত বিম, রেল ও আরও জিনিস আসতে বিলম্বিত হয়েছে, যা প্রকল্পের সরঞ্জাম সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি চ্যালেঞ্জ ছিল। কভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত প্রচেষ্টাকে সিআরইসি সাধুবাদ জানায় ও সিআরইসি সরকারের মহামারি প্রতিরোধ বিধি অনুসরণ করবে। উল্লেখ্য, আমাদের স্থানীয় সাবকন্ট্রাক্টর ও কর্মীদের পাঁচ হাজারের পরিবারের কল্যাণে পিবিআরএলপি কার্যকরভাবে শেষ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্লাইট চালুর দাবি জানিয়ে এতে বলা হয়, উল্লিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করে, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিআরইসি বাংলাদেশে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বিমান চলাচল পুনরায় চালু করার আন্তরিক আবেদন জানাচ্ছে।