নিজস্ব প্রতিবেদক; স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ুর ঝুঁকি মোকাবিলা ও পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগে ভূমিকা রাখতে চলেছে গ্রিন বন্ড। গতকাল রাজধানীর হোটেল রেডিসন ব্ল–তে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত ‘গ্রিন বন্ড অপরচুনিটি ফর মিউনিসিপ্যাল অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়েস্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সারাবিশ্বের জন্য হুমকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছে। উন্নত দেশে আগে থেকে গ্রিন বন্ড নিয়ে কাজ হলেও আমাদের দেশে এখন এর আওতা বাড়ছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এরই মধ্যে নতুন এ বন্ডের অনুমোদন দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উদ্যোক্তাদের গ্রিন বন্ডের জন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে প্রজেক্ট জমা দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর ওই প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে অনুমোদন দেয়া হবে। যেকোনো দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী এখানে বিনিয়োগ করতে পারবেন। এ বিনিয়োগে একদিকে যেমন পরিবেশ রক্ষা হবে, অন্যদিকে বিনিয়োগকারীরা লাভবানও হবেন বলে জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান থেকে শুরু করে টেকসই উন্নয়ন ও অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার বিষয়গুলো গ্রিন বন্ড ট্যাক্স গাইডলাইনে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, এই বিনিয়োগকে উৎসাহ দেয়ার অন্যতম কারণ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত ও কার্বনের নিঃসরণ দ্রুত কমিয়ে সবুজায়নের দিকে যাওয়া। সিটি করপোরেশন, পৌরসভাসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে গ্রিন বন্ড চালুর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম এবং ২০৩০ ওয়াটার রিসোর্সেস গ্রুপের প্রোগ্রাম ম্যানেজার পরমেশ্বর আইয়ার।
অন্যদের মধ্যে আরও ছিলেন ঢাকা ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুজ্জামান কিরণ, স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি ও পৌরসভার মেয়র। পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগে গ্রিন বন্ডের সুবিধা পাবে কম কার্বন নিঃসরণ-সংক্রান্ত যাবতীয় প্রযুক্তি, যেমন বিদ্যুতের হিটিং ও কুলিং, পানি ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি, সবুজ কৃষি প্রভৃতি।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে সোলার পিভি টেকনোলজিতে গ্রিন বন্ড কার্যকর হবে। সোলার পার্ক, সোলার সিস্টেম, সোলার সেচের কাজে ব্যবহƒত সবই গ্রিন বন্ডের আওতায় আসবে। একটি কারখানা কতটুকু তাপমাত্রা নিঃসরণ করছে, সেটাও গ্রিন বন্ডের আওতায় আসবে। বিশেষ করে যারা কম নিঃসরণের শিল্পে বিনিয়োগ করবে, তারা এ বন্ডের সুবিধা পাবে।
পাল্প ও পেপার মিল, ইটভাটা ও ইকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কগুলো গ্রিন বন্ডের আওতায় আসবে। এক্ষেত্রে কারখানাগুলোর বায়ুদূষণ পরীক্ষা করে দেখা হবে। দূষণ কমাতে ট্রিটমেন্ট প্লান্ট থাকলে তার ওপর ভিত্তি করে গ্রিন বন্ডের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
