Print Date & Time : 11 August 2025 Monday 8:14 am

পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পূরণে ৬০ কোম্পানির কাছে রোডম্যাপ চেয়েছে বিএসইসি

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আবারও ৬০টি তালিকাভুক্ত কোম্পানির কাছে তাদের ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পূরণের রোডম্যাপ চেয়েছে।

স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকার জন্য এই শর্ত পূরণ অপরিহার্য উল্লেখ করে ঈদুল আজহার ছুটির আগে বিএসইসি কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) তালিকাভুক্তি বিধিমালা অনুযায়ী, মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকতে হলে একটি কোম্পানির ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকা আবশ্যক। নিয়ন্ত্রক সংস্থা এই শর্ত পূরণে ব্যর্থতাকে সিকিউরিটিজ আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করছে।

এর আগেও এই কোম্পানিগুলোকে তাদের পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল বিএসইসি। কিন্তু বেশিরভাগই তা মানতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে এবার তালিকাভুক্তির শর্ত পূরণে কঠোর অবস্থান নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যারা শর্ত পূরণে ব্যর্থ হবে, তাদের মূল বোর্ড থেকে এসএমই (SME) বা অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (ATB) প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরিত করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির সর্বশেষ অবস্থান জানতে চাইলে কমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, ” আমরা শেয়ারবাজারে স্বল্প পরিশোধিত মূলধন নিয়ে কোনো কোম্পানি দেখতে চাই না। কারণ এটি বাজারের সুনাম ক্ষুণ্ন করে।”

ওই কর্মকর্তা আরও উল্লেখ করেন, স্বল্প পরিশোধিত মূলধনের স্টকগুলো অত্যন্ত অস্থির প্রকৃতির হয় এবং কিছু অসাধু বিনিয়োগকারী দ্বারা এগুলো সহজেই কারসাজির শিকার হয়। এটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হয়। কারণ প্রায়শই স্বল্প মূলধনের শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগ করে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারীই ক্ষতির শিকার হন, যদিও কিছু ক্ষেত্রে স্বল্প মেয়াদে লাভবান হওয়ার সুযোগ থাকে।

কমিশন স্পষ্ট করে বলেছে, স্টক ডিভিডেন্ড ইস্যু করা মূলধন পূরণের একটি বৈধ উপায় নয়, কারণ এটি কেবল শেয়ারের সংখ্যা বাড়ায় কিন্তু প্রকৃত মূলধন বৃদ্ধি করে না। বিএসইসি চায় কোম্পানিগুলো তাদের আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী করার জন্য প্রকৃত তহবিল সংগ্রহ করুক।

এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, নিয়ন্ত্রক সংস্থা ৬৪টি কোম্পানিকে তাদের ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধনের শর্ত পূরণের জন্য পরিকল্পনা জমা দিতে বলেছিল, যাতে তারা স্টক এক্সচেঞ্জের মূল বোর্ডে তালিকাভুক্ত থাকতে পারে। ওই বছর কমিশন একটি কমিটি গঠন করে এই ফার্মগুলোর সামগ্রিক অবস্থা যাচাই করতে এবং স্বল্প পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিগুলোর আর্থিক কর্মক্ষমতা উন্নত করার একটি প্রক্রিয়া খুঁজতে বলেছিল। কোম্পানিগুলোকে চিঠি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে তাদের পরিকল্পনা প্রতিবেদন কমিশনে জমা দিতে বলা হয়েছিল।

বর্তমানে এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১১টি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ৫ কোটি টাকার নিচে, ১৫টি কোম্পানির ১০ কোটি টাকার নিচে, ২১টি কোম্পানির ২০ কোটি টাকার নিচে এবং বাকি কোম্পানিগুলোর ৩০ কোটি টাকার নিচে মূলধন রয়েছে।

এসএস//