নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৬টি ব্যাংকের পর্যাপ্ত রিজার্ভ রয়েছে। তারপরও ব্যাংকগুলোর শেয়ারের দাম ফেসভ্যালুর নিচে অর্থাৎ ১০ টাকার নিচে লেনদেন হচ্ছে। এই ব্যাংকগুলোর সম্মিলিত রিজার্ভের পরিমাণ ১৭ হাজার ৪৩৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা, যা ব্যাংকগুলোর পরিশোধিত মূলধনের অনেক বেশি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ব্যাংকগুলোর নাম ও রিজার্ভের পরিমাণ নিচে দেওয়া হলো-
সাউথইস্ট ব্যাংক
ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রিজার্ভ রয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংকের। এই ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৩৩৭ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ৯১৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির প্রতিটি শেয়ার দর লেনদেন হচ্ছে ৬ টাকায়।
এক্সিম ব্যাংক
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রিজার্ভ রয়েছে এক্সিম ব্যাংকের। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৪৪৭ কোটি ৫৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং বর্তমান রিজর্ভের পরিমাণ ১ হাজার ৮৮১ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বর্তমানে ব্যাংকটির শেয়ার দর হলো ৫ টাকা ৩০ পয়সা।
এবি ব্যাংক
তৃতীয় সর্বোচ্চ রিজার্ভ রয়েছে এবি ব্যাংকের। ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৮৯৫ কোটি ৬৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ৭০১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার বেচাকেনা হচ্ছে ৫ টাকা ৮০ পয়সায়।
আইএফআইসি ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৯২২ কোটি ৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ৬৯০ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৫ টাকা ৬০ পয়সা।
মার্কেন্টাইল ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ১০৬ কোটি ৫৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ৫২৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৭ টাকা ৮০ পয়সা।
প্রিমিয়ার ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ২৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ৪৮৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৬ টাকা ৯০ পয়সা।
এনসিসি ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ১৪০ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ৩১২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৯ টাকা ৭০ পয়সা।
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ২০৮ কোটি ১৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ২৯২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৩ টাকা ৬০ পয়সা।
সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ১৪০ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ১০৮ কোটি টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৭ টাকা ৪০ পয়সা।
ওয়ান ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৬৫ কোটি ৮২ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ৯০০ কোটি ২১ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৬ টাকা ৭০ পয়সা।
স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ১১৫ কোটি ৮৪ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ৭২৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৬ টাকা।
এনআরবিসি ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৮২৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ৬২৮ কোটি ৩ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৫ টাকা ৯০ পয়সা।
ইউনিয়ন ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৩৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ৫৪১ কোটি ১০ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ২ টাকা ৯০ পয়সা।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ১ হাজার ৩৬ কোটি ৮১ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ৩০৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৩ টাকা ২০ পয়সা।
এসবিএসি ব্যাংক : ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৮২৪ কোটি ১৯ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ২৮৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৬ টাকা ৭০ পয়সা।
এনআরবি ব্যাংক
ব্যাংকটির পরিশোধিত মূলধন ৬৯০ কোটি ৫৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং রিজার্ভের পরিমাণ ১২৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ব্যাংকটির বর্তমান শেয়ার দর ৯ টাকা ৫০ পয়সা।
এতে দেখা যায়, ব্যাংকগুলোর শেয়ার দাম ৩ টাকার নিচেও লেনদেন হচ্ছে। অথচ অন্য খাতের শেয়ারে সাধারণত এই রকম দেখা যায় না। সাধারণত রিজার্ভ ভালো থাকলে শেয়ারের দাম ভালো থাকে। ব্যাংক খাতের বাইরে এমন অনেক কোম্পানি আছে, যাদের রিজার্ভ তেমন নেই, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে রিজার্ভ নেগেটিভ হওয়া সত্ত্বেও তাদের শেয়ারের দাম ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। এই বিষয়টি ব্যাংক খাতের বেহাল দশাকে আরও স্পষ্ট করে তোলে, যেখানে শুধুমাত্র রিজার্ভের পরিমাণ শেয়ারের দামকে সমর্থন দিতে পারছে না। এটি ব্যাংক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।