শেয়ার বিজ ডেস্ক: দেশের পাঁচ জেলায় পৃথক ৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে রয়েছে বাস-ট্রলির সংঘর্ষ, বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, ট্রাক-সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষ, দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। এসব দুর্ঘটনায় ৯ জন মারা গেছেন এবং ৪৪ জন আহত হয়েছেন। অধিকাংশ দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে ঘন কুয়াশার কথা জানা গেছে। রংপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সকালে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রংপুর নগরীর সাতমাথা এলাকার চায়না টকিজের কাছে সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশকোচ কুড়িগ্রামগামী পাভেল এক্সপ্রেস ও রংপুরের কাউনিয়া থেকে ছেড়ে আসা ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রলির তিন যাত্রী নিহত হন এবং আরও দুজন গুরুতর আহত হন।
জেলার পীরগঞ্জে সাতক্ষীরা থেকে ছেড়ে আসা কুড়িগ্রামগামী বাসে আরেকটি বাসের ধাক্কার ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৮ জন। পীরগঞ্জ উপজেলার রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের বড়দরগাহ হাইওয়ে ফাঁড়ির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে রংপুর নগরীর নজিরের হাট এলাকায় বাসের ধাক্কায় একজন পথচারী নিহত হয়েছেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানার ওসি আবদুল কুদ্দুস জানান, পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নগরীর সাতমাথায় চায়না টকিজসংলগ্ন এলাকায় নৈশকোচ ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হন। বাকি দুজন ভিন্ন স্থানে নিহত হয়েছেন। তবে এখনও তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি। এদিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলা অংশে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। তিনটি দুর্ঘটনাই সংঘটিত হয়েছে উপজেলার চুনতি ইউনিয়ন এলাকার দুই কিলোমিটার মহাসড়কে। ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানা গেছে, সকাল ৭টার দিকে চুনতি শাহ সাহেব গেট এলাকায় চট্টগ্রামমুখী একটি লবণবাহী ট্রাক ও কক্সবাজারমুখী একটি চালবোঝাই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে চালবোঝাই ট্রাকটি মহাসড়কের পশ্চিমে খাদে পড়ে যায়। লবণবাহী ট্রাকটিও উল্টে যায় মহাসড়কে। এ দুর্ঘটনায় দুই ট্রাকের চালক
গুরুতর আহত হন। তারা হলেন বগুড়া জেলার শাহজাহানপুর এলাকার বাসিন্দা মো. নয়ন (৩৫) এবং চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার বাসিন্দা মো. শাকিল (২০)।
সকাল ৮টায় চুনতির জাঙ্গালিয়া এলাকায় মহাসড়কে একটি ট্রাক ও একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সকাল সাড়ে ৮টায় একই এলাকায় কক্সবাজারমুখী যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের পূর্ব পাশে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খায়। তবে এই দুটি ঘটনায় কেউ হতাহত হননি বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। দোহাজারী হাইওয়ে থানার ওসি শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, দুই লেনের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ছুটির দিনে যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ থাকে। কুয়াশাচ্ছন্ন পিচ্ছিল মহাসড়কে ওভারটেক করতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে।
ময়মনসিংহে একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ওপর উল্টে গেলে ইয়াসিন ও মেহেদী নামে দুই তরুণের প্রাণহানি ঘটেছে। গতকাল সকালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দিগারকান্দায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, নগরীর মাসকান্দা এলাকার ইয়াসিন আবির (১৯) ও পুরোহিত পাড়া এলাকার মেহেদী হাসান (২০)।
কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়কের মিরপুর উপজেলায় পাথরবোঝাই ট্রাকের চাপায় নারীসহ দুজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় মিরপুর উপজেলার রানাখড়িয়া ঘোড়ামারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারী তানিয়া আক্তার। অপরজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পাথরবোঝাই ডাম্প ট্রাকের চাপায় সিএনজিটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এতে ঘটনাস্থলেই চালক ও এক নারী যাত্রীর মৃত্যু হয়। এ সময় সিএনজিতে থাকা আরও দুজন যাত্রী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
কুষ্টিয়া চৌড়হাস হাইওয়ে থানার ওসি সৈয়দ আল মামুন বলেন, লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার পর ট্রাকের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন। ট্রাকটি হেফাজতে আছে।
সিলেটের গোলাপগঞ্জে বিআরটিসি ও যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। ঘন কুয়াশার কারণে এ দুর্ঘটনা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে আহতদের কারও অবস্থা গুরুতর নয়। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গোলাপগঞ্জের দাঁড়িপাতন নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। গোলাপগঞ্জ থানার ওসি মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে এ দুর্ঘটনা হয়েছে। এতে উভয় বাসের ২০ যাত্রী আহত হন। পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত বাস দুটি হেফাজতে নিয়েছে।