পাঁচ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) পর্যন্ত ১৫ হাজার ২৮০ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা বা সাড়ে ১৯ শতাংশ বেশি বিতরণ হয়েছে। গত অর্থবছর এই সময়ে কৃষিঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, চলতি অর্থবছরে কৃষি ও পল্লিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ১৩ দশমিক ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করে নীতিমালা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা; যা গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ হাজার ৮১১ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে কৃষিঋণ বিতরণের পাশাপাশি আদায়ও বেড়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঁচ মাসে ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা আদায় হয়। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ৮৭১ কোটি টাকা। অর্থাৎ পাঁচ মাসে আদায় বেড়েছে ১ হাজার ৬১০ কোটি টাকা বা সাড়ে ১২ শতাংশ।

কয়েকজন ব্যাংকার বলছেন, কৃষকরা কখনও ঋণ জালিয়াতি করেন না। প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ বিভিন্ন কারণে মাঝে মধ্যে সমস্যায় পড়েন তারা। কিন্তু বৃহৎ শিল্প গ্রুপের মতো ঋণখেলাপির প্রবণতা তাদের মধ্যে একেবারেই নেই। তাই তাদের ঋণের আদায় পরিস্থিতি সব খাত থেকে ভালো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণও কমেছে। গত নভেম্বর শেষে এ খাতের খেলাপি কমে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা; যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৪ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ খেলাপি ঋণ কমেছে ২৬০ কোটি টাকা বা ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ।

বর্তমানে বিতরণ করা মোট কৃষিঋণের স্থিতি ৫৪ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৪ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাঁচ মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংক কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ৫ হাজার ২২০ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৪৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংক এ সময় ১০ হাজার ৬০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ৪৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ।

পাঁচ মাসে সবচেয়ে বেশি কৃষিঋণ বিতরণ করেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)। এ সময়ে মোট ৩ হাজার ১২২ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি। দ্বিতীয় অবস্থানে বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংক বিতরণ করেছে ১ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ৮৫৬ কোটি, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ৫৮২ কোটি এবং ঢাকা ব্যাংক ৫৬৬ কোটি টাকা বিতরণ করেছে।