পাটের ভালো ফলনে খুশি নীলফামারীর কৃষক

তৈয়ব আলী সরকার, নীলফামারী: নীলফামারীর সদরের রামনগর, কচুকাটা, পঞ্চপুকুর, ইটাখোলা, সংলশী, চড়াইখোলা, চাপড়া, সোনারায়, টুপামারী, পলাশবাড়ী ও খোকশাবাড়ী ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠে পাটক্ষেতে হাঁটু ছাড়িয়ে মাথা বরাবর বেড়ে উঠেছে পাটগাছ। এবার পাটের ভালো ফলনে খুশি কৃষক। চলতি মাসের শেষদিকে পাট ঘরে তোলার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন তারা।
উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া, চড়চড়াবাড়ী, রামনগর, বিশমুড়ি ও কচুকাটার ইউনিয়নের বাওনাবাউনি, দোনদরী গ্রামের মাঠের পর মাঠজুড়ে পাটক্ষেত। এছাড়াও পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের উত্তরা শশী, কিশামত পঞ্চপুকুর, জামতলা, আরাজী মানুষ মারা গ্রামেও চোখে পড়ে পাট ক্ষেতের সবুজের সমারোহ।
রামনগর ইউনিয়নের বাহালী পাড়া গ্রামের কৃষক তছলিম উদ্দিন জানান, চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সঠিক সময়ে জমিতে বীজ বপন করায় পাটের ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে ভালো দাম পেলেই স্বার্থক হবে কৃষকের পরিশ্রম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলায় পাটের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমি। এতে অর্জিত হয়েছে ৯ হাজার ১৬০ হেক্টর। অর্জিত পাটের ফলন ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৫৩১ টন। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর আবাদ কিছুটা কম হলেও ফলন তুলনামূলক ভালো হয়েছে।
এদিকে, জেলার ছয় উপজেলার মধ্যে পাটের ভালো চাষ হয় ডিমলায়। কিন্তু দুই দফায় কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের সে স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে। এছাড়াও ডোমার, কিশোরগঞ্জ, জলঢাকা, সৈয়দপুর ও সদরের গ্রামগুলোতে কৃষক পাট চাষ করে থাকেন। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে হঠাৎ করে পাটের দাম
কমে যাওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা যেমন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন, তেমনি লোকসানের মুখে পড়েন
স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, অন্য ফসলের তুলনায় পাট কম পরিশ্রমে ঘরে তোলা যায়। এটি একটি অধিক লাভজনক ফসল ও কৃষকের আয়ের উৎস। কম খরচে ভালো ফলন পাওয়ায় এখন কৃষকরা পাটচাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। উচ্চ ফলনশীল ও আগাম জাতের পাটের বীজ বপন করলে তা অল্প সময়ে মাঠ থেকে উঠে আসে এবং পাট সংরক্ষণ ও বিক্রির কোনো ধরনের সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা থাকে না।