শেয়ার বিজ প্রতিনিধি, পাবনা: গত কয়েক দিনের অব্যাহত তীব্র শীতে পাবনায় ঠাণ্ডাজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। এর মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশি। ফলে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে জেলার হাসপাতালগুলোয়। সবচেয়ে বেশি চাপ পড়েছে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে। বর্তমানে শয্যাসংখ্যার দ্বিগুণ-তিনগুণ শিশু ভর্তি রয়েছে হাসপাতালটিতে। ফলে চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, পাবনা জেনারেল হাসপাতালে গত দুই মাসে সাড়ে তিন হাজার শিশু বিভিন্ন রোগে ভর্তি হয়। এর মধ্যে শুধু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ১০ শিশু। এছাড়া অন্য রোগে আরও ৬২টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গত কয়েক দিন ধরে সারা দেশে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় উত্তরের জেলা পাবনায়ও বইছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈতপ্রবাহ। এ কারণে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা ছুটছেন বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ পাবনা জেনারেল হাসপাতালে। কিন্তু সেখান থেকেও মিলছে না কাক্সিক্ষত চিকিৎসাসেবা।
ফলে প্রতিদিনই অন্তত তিন থেকে চারজন শিশুকে রাজশাহী অথবা ঢাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে হাসপাতালে দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের সংকট। একত্রে তিনটি শিশুর জন্য একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ২৫০ শয্যার পাবনা জেনারেল হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যাসংখ্যা মাত্র ৩৩টি। এছাড়া ফটোথেরাপি মেশিন বিকল থাকায় একটি বাল্ব জ্বালিয়ে তিনটি শিশুকে থেরাপি দেওয়া হচ্ছে।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স রাবেয়া খাতুন জানান, শীতের শুরুতে অর্থাৎ গত নভেম্বরে এ হাসপাতালে দুই হাজার ২৫ জন শিশু ভর্তি হয়। তার মধ্যে ৪৪ শিশুর মৃত্যু হয়। এর মধ্যে নিমোনিয়া আক্রান্ত চার শিশু মারা যায়। এছাড়া গত ডিসেম্বরে ভর্তি হয় এক হাজার ৩৫ জন শিশু। এর মধ্যে মারা যায় আট শিশু। যার ছয় শিশুই নিমোনিয়াই আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ জন শিশু শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।