নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পিকে হালদার) দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের একটি টিমকে ভারতে পাঠানো হতে পারে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
গতকাল দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান এসব কথা জানান। তিনি বলেন, পিকে হালদারকে ফেরাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আমরা চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ করি। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আজ জরুরি বৈঠক ডাকে। যেখানে আইন মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটসহ সবাই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আমরা এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করি।
সাঈদ মাহবুব খান বলেন, পিকে হালদারকে ফেরানোর বহিঃসমর্পণ যে আইন বিদ্যমান রয়েছে, তার সমস্ত আইন বিধির দ্বারা কীভাবে তাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে পারি সেই বিষয়ে আলোচনা হয়। তাকে ফেরত আনতে যে সমস্ত ডকুমেন্ট প্রয়োজন সেগুলোর একত্র করার সিদ্ধান্ত হয়। আমরা খুব দ্রুত সেসব প্রস্তুতি সম্পন্ন করব। প্রশান্ত কুমার হালদারকে ভারত থেকে ফেরাতে প্রয়োজনে ভারতের পশ্চিমবেঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে কমিটি করে টিম পাঠানো হতে পারে। তিনি বলেন, কূটনীতিক চ্যানেলসহ অন্যান্য যে সমস্ত চ্যানেল ব্যবহার করে তাকে দ্রুত আনা যায় আমরা সেই চেষ্টা করব। আমরা যতগুলো ইউনিটের কথা বললাম সবার সহযোগিতা ও সমন্বয়ে তাকে দেশে ফেরাতে সফল হবো।
ভারতে পিকে হালদারের সম্পদের খোঁজ করতে দুদক বিএফআইইউকে যে চিঠি দিয়েছে সে বিষয়ে সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, আমরা যে মামলা করেছি সেখানে ভারতে পিকে হালদারের অল্প পরিমাণ সম্পদের তথ্য আমাদের কাছে ছিল, বাকি তথ্যগুলো যদি আমরা পাই তার বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেয়ার ব্যবস্থা নেব। বিএফআইইউ সেই তথ্যগুলো আমাদের সংগ্রহ করে দেবে।
ইন্টারপোলের তৎপরতার বিষয়ে দুদক সচিব বলেন, ‘ইন্টারপোলকে আমরা চিঠি দিয়েছি। ইতোমধ্যে ইন্টারপোলের প্রধান শাখা থেকে ভারতীয় ইন্টারপোলের যারা আছেন তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা যেন সেই যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। আর পিকে হালদারের বিষয়ে আমরা যে রেড অ্যালার্ট জারি করেছি সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছি।’
দুদক সূত্রে জানা গেছে, পিকে হালদারকে গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি প্রথম ইন্টারপোলে চিঠি পাঠায় দুদক। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১০ জানুয়ারি ইন্টারপোল পিকে হালদারের বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারি করেছিল। এরপর গত ১৪ মে পিকে হালদারকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অশোকনগর থেকে গ্রেপ্তারের পরদিন ১৫ মে ইন্টারপোলের ঢাকা ডেস্ক থেকে নয়াদিল্লি ডেস্কে আরও একটি চিঠি পাঠানো হয়।
গত ১৪ মে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে পিকে হালদার ও তার পাঁচ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আদালতে হাজির করলে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। ১৭ মে তার বিরুদ্ধে আরও ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন কলকাতার একটি আদালত।