Print Date & Time : 29 July 2025 Tuesday 7:38 pm

পুঁজিবাজারে শুদ্ধি অভিযান চান বিনিয়োগকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য শুদ্ধি অভিযান চান বিনিয়োগকারীরা। এই লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও বিভিন্ন ইস্যু ম্যানেজারদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের নেতারা।

সংগঠনের সভাপতি মিজান উর রশিদ বলেন, সর্বশেষ চলতি বছরের ১৮ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর বরাবর বাজারের সার্বিক প্রেক্ষাপট, সমস্যা ও সমাধান নিয়ে একটি স্মারকলিপি পেশ করি। কিন্তু বাজারে স্থায়ী স্থিতিশীলতা আজও ফিরে আসেনি। তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা থেকে শুরু করে অধিকাংশ স্টেকহোল্ডারের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা, ঢাকা-চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, আইসিবি, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের বেশ কিছু অসাধু কর্মকর্তার সীমাহীন দুর্নীতি ও লুটপাট পুঁজিবাজার ধসের মূল কারণ।

সংবাদ সম্মেলনে পুঁজিবাজারকে স্থিতিশীল ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ২১ দফা দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি মো. মিজান উর রশিদ চৌধুরী। এ সময় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আ. রাজ্জাকসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিনিয়োগকারীদের দাবিতে উল্লেখ করা হয়, পুঁজিবাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য ক্যাসিনো মার্কেটের মতো বিএসইসি, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, আইসিবি ও বিভিন্ন ইস্যু ম্যানেজারদের বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা এবং বাইব্যাক আইন পাস করতে হবে।

পাশাপাশি বাজারের স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে আগামী তিন বছর পর্যন্ত সব ধরনের আইপিও, রাইট শেয়ার ইস্যু বন্ধ রাখতে হবে। প্লেসমেন্ট শেয়ারের অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করা জরুরি।

দাবিতে আরও রয়েছে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি, ডাইরেক্ট লিস্টিং পদ্ধতি বাতিল করা। ২ সিসি আইনের বাস্তবায়ন করতে যেসব কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকের ব্যক্তিগতভাবে দুই শতাংশ এবং সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার নেই, ওইসব উদ্যোক্তা পরিচালক ও কোম্পানিগুলোকে শেয়ার ধারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের পুনর্গঠন করতে হবে।

কোম্পানি আইনে কোথাও ‘জেড’ ক্যাটেগরি এবং ওটিসি মার্কেটের কথা উল্লেখ নেই। তাই শেয়ারের কোনো বিভাজন করা যাবে না। একইভাবে কোনো কোম্পানিকে ডি-লিস্টিং করা যাবে না। সম্প্রতি ডি-লিস্টিং হওয়া মডার্ন ডায়িং ও রহিমা ফুড কোম্পানির শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

বিনিয়োগকারীদের দাবির মধ্যে বাজারের উন্নয়নের স্বার্থে বহুজাতিক লাভজনক কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার দাবিও জানান তারা।

দাবিতে খন্দকার ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, পুঁজিবাজার লুণ্ঠনকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা উল্লেখ করা হয়। ভুক্তভোগী বিনিয়োগকারীদের দাবিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১০-২০১৯ সাল পর্যন্ত যেসব বিনিয়োগকারী অসুস্থ হয়ে হার্ট অ্যাটাক করে আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

এছাড়া পুঁজিবাজারের এই ক্রান্তিকালে মার্জিন ঋণে জর্জরিত বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে এবং বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য এ মুহূর্তে মার্জিন ঋণের আওতাভুক্তদের সুদ সম্পূর্ণ মওকুফ করাসহ বেশকিছু গুরুত্ব দাবি জানান তারা।