নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : টানা দরপতনে বিপর্যস্ত পুঁজিবাজার। সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা কমেছে। বিপরীতে দেশের আরেক পুঁজিবাজার সিএসইতেও লেনদেন কমেছে। তবে ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৪১ দশমিক ২৫ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৬৭৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট কমে এক হাজার ২৪ পয়েন্টে এবং ডিএসই৩০ সূচক ১৭ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৭২৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে লেনদেনে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯২টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৩৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৭২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২২৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪৯ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১২৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩৯ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৫৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৫৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একই সঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র একটি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৪টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২১টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১৫ কোটি ৫১ লাখ ৩১ হাজার ৬০২টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ পাঁচ হাজার ৯৮৮ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৮২ কোটি ৬১ লাখ টাকা।
এদিকে সিএসইতে গতকাল মোট ২০৭টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৬১টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১১৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ৩৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ১০ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সতর্কতা বিরাজ করছে। অন্যদিকে বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমে যাওয়ায় পুঁজিবাজারে একধরনের অস্থিরতা দেখা গেছে। বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চলমান এই দরপতন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সতর্কবার্তা। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোনো বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের আগে ভালোভাবে বাজার বিশ্লেষণ এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। আগামী কার্যদিবসে বাজারের গতিবিধি কী হয়, তা জানতে অপেক্ষাও করতে বলছেন তারা।