নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : দেশের পুঁজিবাজারে সূচকের পতন অব্যাহত রয়েছে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল সোমবার আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা কমেছে। বিপরীতে দেশের আরেক পুঁজিবাজার সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে। তবে ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৪ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ সূচক চার পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক আট পয়েন্ট কমে যথাক্রমে ১০৪১ ও ১৭৭১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে লেনদেনে ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে। সেইসঙ্গে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৭টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১২৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২০২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৭০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ২১৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫৬ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৩৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৭ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর। একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮২টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি ফান্ড ও কোম্পানির দরদাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
জেড’ ক্যাটাগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর। একসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র পাঁচটি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ২৪টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৭টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১৭ কোটি ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৭৪টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ৩ হাজার ৩০৮ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ২৮৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৯২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ১৮৯টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১০১টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ৩১টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১০ কোটি এক লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, টানা তিন কার্যদিবস পুঁজিবাজার নিম্নমুখী থাকায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। কিছু খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা গেছে। তবে বেশ কিছু শেয়ারে মুনাফা তোলার প্রবণতাও দেখা গেছে। আগামী দিনে বাজারের গতিবিধি কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন দেখার বিষয়। এদিকে টানা পতনের এই পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোনো পদক্ষেপ নেয় কি না, সেদিকেই এখন বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি।