পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে চলছে দুবাই বিমানবন্দর

শেয়ার বিজ ডেস্ক: শতভাগ সক্ষমতা নিয়ে চলছে দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সব টার্মিনাল চালু রয়েছে। পাশাপাশি টার্র্মিনালের লাউঞ্জ, রেস্টুরেন্ট ও দোকানপাট তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। খবর: খালিজ টাইমস।

দুবাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রতি টার্মিনাল ৩-এর শেষ ধাপ ‘কনকোর্স এ’ চালু করেছে। এর মধ্য দিয়ে ফের পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে শুরু হলো বিশ্বের ব্যস্ততম এ বিমানবন্দরের কার্যক্রম। কভিড-১৯ মহামারির মধ্যে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা আরও চাঙ্গা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

এক বিবৃতিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সব টার্মিনাল, লাউঞ্জ, রেস্টুরেন্ট ও দোকানপাট খুলে দেয়া হয়েছে।

টার্মিনাল-৩ থেকে চলতি মাসেই ১৬ লাখের বেশি যাত্রীকে সেবা দেয়া হবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ। গত অক্টোবরে ১০ লাখের বেশি যাত্রী যাতায়াত করে এ বিমানবন্দর দিয়ে। নভেম্বরে প্রতি সপ্তাহে ১০ লাখ যাত্রী যাওয়া-আসার লক্ষ্যমাত্রা স্পর্শ করে। এর মধ্য দিয়ে মহামারি-পূর্ব অবস্থায় ফিরে যায় দুবাই বিমানবন্দর।

বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পল গ্রিফিথস বলেন, এ বিমানবন্দরের সব সুবিধা আবার চালু করা হয়েছে। যাত্রীরা পূর্ণাঙ্গ সেবা পাচ্ছেন। একই সঙ্গে অসংখ্য যাত্রী এ স্থান দিয়ে যাতায়াত করছেন। এ কারণে দুবাইয়ের বিমান খাত গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক স্পর্শ করল। এতে দুবাইয়ের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চারিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বমানের নিরাপত্তাবলয় তৈরি করেছি। সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি, পিসিআর পরীক্ষা ও যাত্রীসেবা বাড়াতে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। যাত্রীরা যেন স্বচ্ছন্দে সব ধরনের সেবা পান, সে ব্যবস্থা নিয়েছি।

গত বছর মার্চে দুবাই বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম স্থগিত করে দেয়া হয়। একই বছর ২২ জুন টার্মিনাল-২ ও ৩ থেকে অভ্যন্তরীণ যাত্রীরা যাতায়াত শুরু করেন। এরপর আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ওপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হলে আবার এ বিমানবন্দরে গতি ফিরে আসে।

আরব আমিরাতের যাত্রীদের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয় ২০২০ সালের ২৩ জুন। পরে ৭ জুলাই প্রথম আন্তর্জাতিক পর্যটককে স্বাগত জানায় দুবাই। এর আগে টার্মিনাল-১ ও কনকোর্স ডি চালু করা হয় ২৪ জুন। এ টার্মিনাল থেকে ৬০টির বেশি বিমান সংস্থার ফ্লাইট ওঠানামা করে।

১৮ মাস ধরে যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে, যা সাম্প্রতিক সময়ে সর্বোচ্চ পর্যায়ে যায়। চলতি বছর প্রথম প্রান্তিকে এক কোটি ৬০ লাখ যাত্রী এ বিমানবন্দর দিয়ে যাতায়াত করেন। দ্বিতীয় প্রান্তিকে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়। এ সময় দুই কোটি ৭০ লাখ যাত্রী পায় বিমানবন্দরটি। শেষ প্রান্তিকে এ যাত্রীর সংখ্যা দুই কোটি ৮৯ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যা গত সেপ্টেম্বরের তুলনায় ২১ লাখ বেশি।

বিশ্বের অন্য বিমানবন্দরের তুলনায় দুবাই বিমানবন্দর দিয়ে যাত্রী ওঠানামা বেড়েছে। এর পেছনে দুবাই ভ্রমণও ভূমিকা রাখছে। তবে ওমিক্রন-সংক্রান্ত বিধিনিষেধ না এলে মহামারির আগে যেমন যাত্রী পাওয়া যেত, চলতি ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহেও তেমন যাত্রী আসবে বলে আশাবাদী গ্রিফিথস।

তবে কভিড-১৯-এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। ওমিক্রণের কারণে এরই মধ্যে এমিরেটস তাদের কেনিয়া থেকে আসা সব ফ্লাইট ৪৮ ঘন্টার জন্য বাতিল করেছে। গতকাল এক বিবৃতিতে এ খবর জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। অবশ্য এখনও দুবাই থেকে নাইরোবিগামী কোনো ফ্লাইট বাতিল করেনি এমিরেটস।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দুবাই সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (ডিসিএএ) কেনিয়া থেকে দুবাই আসা সব ফ্লাইট সাময়িক বাদ দিয়েছে, যা ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেনিয়া থেকে কোনো যাত্রী দুবাইয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।

তবে এ ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন বলেছেন প্রধান নির্বাহী গ্রিফিথস। তিনি বলেন, এতে দুবাইয়ে যাত্রী আসা-যাওয়ায় কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। কেননা আগেই নাইজেরিয়া, কেনিয়া, রুয়ান্ডা ও ইথিওপিয়ার ওপর ভ্রমণ বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল।