Print Date & Time : 5 July 2025 Saturday 4:40 pm

পেঁয়াজের দাম সামান্য কমেছে সবজির দাম বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাজারে কমে এসেছে পেঁয়াজের দাম। কয়েকটি দোকানে ১০০ টাকার নিচে পাওয়া যায় ভারতীয় পেঁয়াজ। যদিও ক্রস ও দেশি পেঁয়াজ কালও বিক্রি হয় ১০০ টাকার ওপরে। সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমলেও বেড়েছে আলুর দাম। বাজারে সাধারণত লাল, সাদা ও বগুড়ার আলুই পাওয়া যায়। গতকাল এই তিন ধরনের আলুর দামই বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে। এছাড়া বেশকিছু সবজির দামও বেড়েছে। যেসব সবজির দাম বাড়েনি কিংবা অপরিবর্তিত রয়েছে সেগুলোর দামও চড়া! গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। গতকাল বাজারে বেশ কয়েকটি সবজির দাম বেড়েছে। পাশাপাশি কমেছে দুই তিনটি সবজির দাম। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম ছিল অপরিবর্তিত। নতুন আলু ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, ভারতীয় টমেটো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, টক টমেটো ১৬০ থেকে ১৮০, কাঁচা টমেটো ৮০, চায়না গাজর ১৬০, শিম ১২০, লম্বা বেগুন ৬০ থেকে ৭০, সাদা গোল বেগুন ৮০ থেকে ১০০, কালো গোল বেগুন ১০০ থেকে ১১০, শসা ৭০ থেকে ১২০, উচ্ছে ১০০, করল্লা ১০০, পেঁপে ৫০, মূলা ৭০, ঢ্যাঁড়শ ৮০ থেকে ১০০, পটোল ৬০ থেকে ১০০, চিচিঙ্গা ৮০, ধুন্দল ১০০, ঝিঙা ৮০, বরবটি ১০০, কচুরলতি ৮০, কচুরমুখী ৮০, মিষ্টিকুমড়া ৬০, কাঁচামরিচ ১৬০, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৯০ থেকে ১২০ টাকা, চাল কুমড়া ৮০, ফুলকপি ৭০, বাঁধাকপি ৭০ বিক্রি হয় টাকা করে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচাকলা ৪০ টাকা, হালি লেবু বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৫০ টাকা করে।

গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনায় গেলে দেখা যায়, প্রতি কেজিতে ভারতীয় টমেটোর দাম বেড়েছে ২০ টাকা, চায়না গাজরের দাম ১০ টাকা বেড়েছে, শিমের দাম বেড়েছে ২০ টাকা, শসার (হাইব্রিড) দাম বেড়েছে ১০ টাকা, মূলার দাম বেড়েছে ১০ টাকা এবং ধুন্দলের দাম বেড়েছে ৪০ টাকা। এছাড়া প্রতি পিস লাউয়ের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৪০ টাকা এবং ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ১০ টাকা করে বেড়েছে।
প্রতি কেজিতে কাঁচা টমেটোর দাম ২০ টাকা কমেছে। লম্বা বেগুনের দাম কমেছে ১০ থেকে ২০ টাকা, পটোলের (হাইব্রিড) দাম কমেছে ২০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। সবজির দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে বিক্রেতা শাহ আলম বলেন, ‘সবজির দাম প্রতিদিনই বাড়ে-কমে, কাঁচামালের দাম এমনই হয়। তবে এখন যেসব সবজির সিজন শেষ, সেগুলোর দাম বাড়াটাই স্বাভাবিক।’
এদিকে বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, যেসব সবজির মৌসুম শেষ, সেগুলোর দাম বাড়বে এটা আমরাও জানি। কিন্তু এখন যেসব সবজির মৌসুম সেগুলোর দাম কেন বাড়ছে? এখনও সবজির দাম কেন বেশি? এগুলো কমাতে হবে, না কমলে আমাদের চলা কঠিন।
গতকাল বাজারে আকার ও মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়। এর মধ্যে ছোট পেঁয়াজ ১২০ টাকা ও বড় সাইজের পেঁয়াজ ১৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১৩০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ থেকে ১০০ টাকা করে। এছাড়া লাল আলু ৮০ টাকা, সাদা আলু ৮০, বগুড়ার আলু ৯০, দেশি রসুন ২৬০, চায়না রসুন ২৪০, চায়না আদা ২৪০, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ টাকা দরে বিক্রি হয়।

গতকাল প্রতি কেজিতে দেশি পেঁয়াজের দাম কমেছে ২০ টাকা, ক্রস জাতের পেঁয়জের দাম কমেছে ১০ থেকে ২০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমেছে ১০ টাকা। এদিকে সব ধরনের আলুর দামই বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে। আজকে চায়না আদা ও নতুন ভারতীয় আদার দাম কমেছে ২০ টাকা করে। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তিত ছিল।
বাজারে গত সপ্তাহেও লাল ও সাদা আলুর দাম বেড়েছিল কেজিতে ৫ টাকা এবং বগুড়ার আলুতে ১০ টাকা। গতকালও আলুর দামই বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১০ টাকা করে।
আলুর দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে বিক্রেতা মো. ইউসুফ বলেন, ‘নতুন আলু বাজারে এখনও সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। তারপর আবার লাগানোর জন্য বাজার থেকে আলু কিনছেন অনেকে। এতে একটা সংকট তৈরি হয়েছে। এ কারণেই দামটা বেশি। আর পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি হওয়াতে দাম এখন কমে এসেছে। নতুন পেঁয়াজ এলে দাম আরও কমে যাবে।’
এদিকে আলুর দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। সেলিম হোসেন নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘আলুর দাম বেড়েই যাচ্ছে। এর লাগাম সরকার টানতে পারছে না। শক্তভাবে মেইনটেইন করা উচিত। না হলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের বেঁচে থাকা কঠিন হবে।’
এছাড়া গতকাল বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হয় ৭৫০ টাকা কেজি দরে। খাসির মাংস বিক্রি হয় ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে। ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ২০৩ টাকা, কক মুরগি ২৮৫ থেকে ২৯৫, লেয়ার মুরগি ২৮০, দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১৪৪ টাকা, সাদা ডিম ১৪০ থেকে ১৪৪ টাকায় বিক্রি হয়।

গতকাল ব্রয়লার মুরগি দাম কেজিতে কমেছে দুই টাকা, কক মুরগির দাম কমেছে পাঁচ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম কমেছে পাঁচ টাকা। এছাড়া গরুর মাংস, খাসির মাংস ও দেশি মুরগির দাম অপরিবর্তিত ছিল। ফার্মের মুরগির লাল এবং সাদা ডিমের দাম অপরিবর্তিত ছিল।
গতকাল বাজারে আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ১০০০ থেকে ১৮০০ টাকা, রুই মাছ ৪০০ থেকে ৫৫০, কাতল মাছ ৩৮০ থেকে ৫০০, কালিবাউশ ৪০০ থেকে ৫৫০, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১৪০০, কাঁচকি মাছ ৪০০, কৈ মাছ ২০০ থেকে ৬০০, পাবদা ৪০০ থেকে ৮০০, শিং মাছ ৪০০ থেকে ১২০০, টেংরা ৬০০ থেকে ১২০০, বেলে মাছ ১০০০ থেকে ১২০০, বোয়াল ৯০০ থেকে ১১০০, কাজলী মাছ ১০০০ থেকে ১৩০০, শোল ৯০০ থেকে ১১০০, মেনি মাছ ৫০০ থেকে ৭০০, চিতল ৬০০, সরপুঁটি ২৫০ থেকে ৪০০, রূপচাঁদা ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। মুদি দোকানের পণ্যের দাম আজ অপরিবর্তিত থাকলেও কমেছে চিনির দাম। তবে খোলা সয়াবিন ও খোলা সরিষার তেলের দাম বেড়েছে। ছোট মুসরের ডাল ১৩৫ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৪০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৭০ টাকা, খেশারি ডাল ১১০ টাকা, বুটের ডাল ১৪৫ টাকা, মাশকালাইয়ের ডাল ১৯০ টাকা, ডাবলি ৭৫ টাকা, ছোলা ১৩০ টাকা, প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫০ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মান ভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৩০ টাকা, খোলা চিনি ১২৬ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়।

এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, গতকাল প্রতি কেজিতে প্যাকেট চিনির দাম কমেছে পাঁচ টাকা এবং খোলা চিনির দাম কমেছে চার টাকা। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে তিন টাকা এবং খোলা সরিষার তেলের দাম বেড়েছে ১০ টাকা।