প্রকাশ্যে বন বিভাগের গাছ কেটে সাবাড়

প্রতিনিধি, মীরসরাই (চট্টগ্রাম): মীরসরাই উপজেলার বন বিভাগের হিঙ্গুলী বিটের আকাশমণি বাগান কেটে সাবাড় করার অভিযোগ উঠেছে। প্রকাশ্যে স্থানীয় বিট কর্মকর্তাদের সামনে আকাশমণি বাগানে লুট চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। চোখের সামনে বাগান লুটের ঘটনায় হতাশ স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে হিঙ্গুলী বিট বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এসব গাছ আমাদের বন বিভাগের নয়, এসব গাছ করেরহাট বিটের আওতায়। আসলে আকাশমণি গাছগুলো কোন বিটের আওতায় এ নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার হিংগুলী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামের হুরিঙ্গা টিলা এলাকায় প্রায় পাঁচ হাজার গাছ কেটে সাবাড় করছে। যদিও ওইখানে হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদ একটি সাইনবোর্ডে লেখা আছেÑবাংলাদেশ সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুপাতে খাস ও এনিমি সম্পত্তির মালিক বাংলাদেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে ইউনিয়ন পরিষদ। এর পূর্বদিকে রয়েছে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রিজার্ভ ফরেস্ট। এখানে প্রায় সাত-আট বিঘা জমির আকাশমণি বাগানের গাছ কেটে গাছের গুঁড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সদ্য কেটে ফেলা গাছের গোড়াও পড়ে আছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাছ কাটার নেতৃত্বে থাকা শ্রমিকরা বলেন, ‘গাছগুলো ২নং হিঙ্গুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোনা মিয়া কাটছেন। আর চেয়ারম্যানের সঙ্গে বন কর্মকর্তার ভালো সম্পর্ক থাকার কারণে গাছগুলো কাটছেন।’ এ ব্যাপারে হিঙ্গুলী বিট কর্মকর্তা মাসুদ সরকার বলেন, হুরিঙ্গা টিলা এলাকায় আকাশমণি যে গাছগুলো কাটা হচ্ছে, সেগুলো আমাদের রেঞ্জের আওতাধীন নয়, করেরহাট রেঞ্জের আওতাধীন।

করেরহাট বিট কর্মকর্তা শিবু দাশ জানান, হুরিঙ্গা টিলা এলাকা আমাদের রেঞ্জের আওতাধীন নয়, এটা হিঙ্গুলী রেঞ্জের আওতাধীন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত হিঙ্গুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোনা মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হুরিঙ্গা টিলার গাছগুলো যার গাছ, সে কাটছে। পরে তিনি আরও বলেন, আমার কাছে ওই গাছগুলোর অনুমতি কাগজপত্র আছে। কোথায় থেকে কাগজপত্র নিয়েছেনÑজানতে চাইলে তিনি বলেন মীরসরাই রেঞ্জ থেকে কাগজপত্র নিয়েছি।’

এ ব্যাপারে মীরসরাই রেঞ্জ কর্মকর্তা শাহেন শাহ্ নওশাদ বলেন, ‘আকাশমণি গাছগুলো আমাদের বন বিভাগের আওতায় নয়, এগুলো করেরহাট রেঞ্জের আওতাধীন। আর চেয়ারম্যান আমাদের রেঞ্জ থেকে হুরিঙ্গা টিলার কোনো অনুমতি নেননি। চেয়ারম্যান গোভনিয়া বিটের কিছু গাছের অনুমতি নিয়েছেন।’

ইউনিয়ন পরিষদের সরকারি খাস জায়গার মধ্যে আকাশমণি গাছ কাটার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজা জেরিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

চট্টগ্রাম উত্তর বন-বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক কর্মকর্তা জামিল মোহাম্মদ খান বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবগত ছিলাম না। যেহেতু জেনেছি, তাই আমি লোক পাঠিয়েছি। বিস্তারিতভাবে জেনে আপনাদের জানাব।’