Print Date & Time : 11 September 2025 Thursday 8:20 pm

প্রতিজ্ঞা করছি, থেমে থাকব না: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলার পথ যতই অন্ধকারাচ্ছন্ন, বন্ধুর কিংবা কণ্টকাকীর্ণ হোক, তাতে না থেমে জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি উদ্যাপনের অনুষ্ঠানে রবার্ট ফ্রস্টের কবিতা থেকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘দ্য উডস আর লাভলি, ডার্ক অ্যান্ড ডিপ, বাট আই হ্যাভ প্রমিজেস টু কিপ, অ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ, অ্যান্ড মাইলস টু গো বিফোর আই স্লিপ।’

গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি জানি, স্বাধীনচেতা হলে অনেক বাধা আসে। আর দেশকে ভালোবেসে শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে যারা পথ চলে, তাদের পথ চলা কখনও সহজ হয় না। অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়। চলার পথ যতই অন্ধকারাচ্ছন্নই হোক না কেন, যত বন্ধুর হোক না কেন, যত কণ্টকাকীর্ণ হোক, সেখানে আমরা থেমে থাকব না। অন্তত আমি এই প্রতিজ্ঞা করছি থেমে থাকব না। চলার পথ যত কণ্টকাকীর্ণ হোক, যত রক্তক্ষরণ হোক, সব পদদলিত করে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাবÑএটাই হচ্ছে আমার প্রতিজ্ঞা।’

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সুপারিশ গত নভেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অনুমোদন পায়। উত্তরণের ক্ষেত্রে পাঁচ বছর প্রস্তুতির সময় পাবে। অর্থাৎ ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে কোনো সময় আমি জানি অনেক বুলেট, বোমা, গ্রেনেড আমার জন্য অপেক্ষা করে থাকে। আমি কখনও সেগুলো নিয়ে পরোয়া করি না। আমি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করি।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে যে লক্ষ্য স্থির করেছিলেন, সেই লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তার মেয়ে শেখ হাসিনা। নতুন প্রজন্মই বাংলাদেশকে সেই পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে, এমন আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সেভাবেই তাদের তৈরি করতে চাই যে ভবিষ্যৎ প্রজš§ যেন এই চলার গতিটা ধরে রাখতে পারে। সেই লক্ষ্যটা সামনে নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা বিজয়ী জাতি। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। বিশ্ব দরবারে বিজয়ী জাতি হিসেবে সম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে আমরা চলব।’

নতুন প্রজন্মের কাছে নিজের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অন্তত আমি তাদেরকে এটুকু আহ্বান করব যে দেশকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে। সেখানেই শান্তি, সেখানেই অগ্রগতি, সেখানেই উন্নতি, সেখানেই স্বস্তি।’

দেশকে এগিয়ে নিতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপ ও পরিকল্পনার কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘চিরদিন কেউ বাঁচে না। কিন্তু যেই কাজ আমরা করে গেলাম, সেই গতি যেন হারিয়ে না যায়, চলার গতি যেন অব্যাহত থাকে, বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়Ñসেটাই আমরা চাই।’

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও গণভবন থেকে এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত ছিলেন।