শেয়ার বিজ ডেস্ক: টানা বিক্ষোভ ও সহিংসতার পর হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম বিতর্কিত একটি প্রত্যর্পণ বিল প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল বুধবার তার এ ঘোষণা টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এর আগে সরকারপন্থি আইন প্রণেতা ও চীনের ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে হংকং প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক ঘরোয়া বৈঠকে তিনি বিলটি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। খবর: রয়টার্স।
ভাষণে প্রধান নির্বাহী বলেন, ‘দীর্ঘস্থায়ী সহিংসতা আমাদের মৌল ভিত্তি, বিশেষ করে আইনের শাসনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। জনসাধারণের উদ্বেগ কমাতে আমাদের সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে বিলটি প্রত্যাহার করে নেবে।’ লামের এ ‘নতিস্বীকার’ হংকংয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করবে কি না, তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি।
বিচারের জন্য বাসিন্দাদের চীনের মূল ভূখণ্ডে পাঠানোর সুযোগ রেখে আইন সংশোধনে ওই প্রত্যর্পণ বিলটি পাসের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বিলটি পাস হলে এ আইনের সুযোগে বেইজিং হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থি রাজনৈতিক কর্মীদের চীনের কমিউনিস্ট বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে দীর্ঘ মেয়াদে নির্যাতন ও হয়রানি করতে পারেÑএমন শঙ্কা থেকে শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ; যা পরে শহরটিতে আরও গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবিতে রূপান্তরিত হয়।
আন্দোলনের মুখে লাম বিলটি পাসের পরিকল্পনা ‘স্থগিত রাখার’ ঘোষণা দিলেও বিক্ষোভকারীরা শান্ত হননি। ব্রিটেনের কাছ থেকে হংকং চীনের কাছে হস্তান্তরের পর প্রথমবারের মতো টানা তিন মাসের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা ও অরাজকতা হয়েছে। বেইজিং এ বিক্ষোভের বিরুদ্ধে বারবার হুশিয়ারি উচ্চারণ করলেও সরাসরি কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করেনি; লামের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থনের কথাও ধারাবাহিকভাবে বলেছে তারা।
হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী অবশ্য গত সপ্তাহে ব্যবসায়িক নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রত্যর্পণ বিলটি উত্থাপন করে ‘অমার্জনীয় সর্বনাশ’ করার কথা স্বীকার করেছিলেন বলে রয়টার্সের অনুসন্ধানে উঠে এসেছিল। ‘সুযোগ থাকলে ক্ষমা চাইতাম ও পদত্যাগ করতাম’Ñফাঁস হওয়া এক অডিও বার্তায় তার কণ্ঠে এমনটাও শোনা গেছে বলে জানিয়েছে তারা।
বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলটি প্রত্যাহারের পর বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় অবস্থান অব্যাহত রাখেন কি না, তা-ই এখন দেখার বিষয়। গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা সাম্প্রতিক সময়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশি দমন-পীড়নের নিরপেক্ষ তদন্ত ও লামের পদত্যাগ দাবি করে আসছেন। তিন মাসের এ বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত এক হাজার ১৮৩ জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।
