নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারত থেকে ট্রাকে পণ্য পরিবহন বন্ধ। অজুহাত করোনা। তবে ব্যবসা তো আর বন্ধ রাখা যায় না। কতদিন ব্যবসায়ীরা লোকসান দেবে। রেলকার্গোতে আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা। রেলে একগুচ্ছ সুবিধা পেয়ে ব্যবসায়ীরা ঝুঁকছেন রেলে পণ্য আমদানিতে। এতে রাজস্ব আহরণের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। সকল হতাশা কাটিয়ে ২৬ জুলাই দেশে প্রথমবারের মতো কমার্শিয়াল কার্গো ট্রেন প্রবেশ করে।
২৮ জুলাই আসলো পিকআপ ভ্যান নিয়ে ১৩টি ওয়াগনের আরো একটি কার্গো। নিটল-নিলয় গ্রুপ ভারত থেকে টাটার ৫১টি পিকআপ ভ্যান আমদানি করেছে। প্রথম কমার্শিয়াল ট্রেনে কিছু বিলাসী পণ্যের আমদানি হয়। এতে ভালো রাজস্ব আহরণ হয়। পিকআপ ভ্যানের চালান থেকেও ভালো রাজস্ব আহরিত হবে। ঈদের পর রেল কার্গোতে এ ধরনের উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি আরও বাড়বে বলে আশা করছে বেনাপোল কাস্টম হাউস।
## পিকআপ থেকে রাজস্ব আহরিত হবে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা
## উচ্চ শুল্কের পণ্য আমদানি বাড়বে ঈদের পর
কাস্টম হাউস সূত্র জানায়, ২৮ জুলাই রোববার ভারত থেকে একটি রেলকার্গো বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। যাতে ১৩টি ওয়াগনে ৫১টি টাটা ব্যান্ডের পিকআপ ভ্যান রয়েছে। সহকারী কমিশনার কল্যানমিত্র ও তার পরীক্ষণ টিমের উপস্থিতিতে ভ্যানগুলো বন্দরের ইয়ার্ডে আনলোড করা হয়। বাংলাদেশে এসব ভ্যান আমদানি করেছে নিটল-নিলয় গ্রুপের নিটল মোটরস লিমিটেড। রপ্তানিকারক টাটা মোটরস লিমিটেড।
সূত্র আরও জানায়, ৫১টি পিকআপ ভ্যানের মোট শুল্ককর আহরিত হবে এক কোটি ৩০ লাখ ৩৬ হাজার ৮৮৯ টাকা। যাতে প্রতিটি পিকআপ ভ্যান থেকে শুল্ককর আহরিত হবে প্রায় দুই লাখ ৫৫ হাজার ৬২৫ টাকা। আমদানিকারক বিল অব এন্ট্রি দাখিলের পর প্রক্রিয়া শেষে খালাস দেওয়া হবে। তবে এত অল্প সময়ে এত গাড়ি বেনাপোল বন্দরের ইতিহাসে আমদানি হয়নি।
বেনাপোল কাস্টম হাউস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, বন্দর ইয়ার্ডে গাড়িগুলো রাখা হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষে খালাস দেওয়া হবে। কমার্শিয়াল রেলকার্গো চালুর পর প্রথমবার গাড়ির চালান এসেছে। রাজস্ব আহরণের সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। তবে ঈদের পর এ ধরনের পণ্যের আমদানি বাড়বে বলে আশা করছি।

এর আগে ২৬ জুলাই স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম কমার্শিয়াল কন্টেইনার ট্রেন কলকাতা থেকে বেনাপোলে প্রবেশ করেছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের আমদানিকারকদের ৫০টি কন্টেইনারে ৬৪০ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে ভারতের প্রথম কার্গো ট্রেন। ৫০ কন্টেইনারের মধ্যে এমজিএইচ গ্রুপের ২২টি কন্টেইনার। যাতে জিলেট ফোম থেকে শুরু করে জিলেটের সব পণ্য ছিল। বিলাসী এসব পণ্য উচ্চ শুল্ক আরোপ রয়েছে। বাকি কন্টেইনারে গার্মেন্টের কাঁচামাল রয়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যে এর আগে প্রথম পার্সেল ট্রেনে এসেছিল ৩৮৪ টন শুকনো মরিচ। এ ছাড়া অন্যান্য ট্রেনে পেঁয়াজসহ খাদ্য সামগ্রী আসছে সাধারণ মালবাহী ট্রেনে। কার্গো ট্রেনে বেনাপোল বন্দরে এসেছে পি অ্যান্ড জি বাংলাদেশ লিমিটেডসহ আটটি কোম্পানির পণ্য নিয়ে।
নিটল-নিলয় গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ রেলকার্গো বিষয়ে শেয়ার বিজকে জানিয়েছেন, ‘করোনার কারণে আমরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। তিন-চার মাস ধরে ট্রাক আটকে আছে। ৭০-৮০ শতাংশ কাঁচামাল তো এ বন্দর দিয়ে আমদানি হয়। আমরা বাধ্য হয়েই রেলে আমদানি উৎসাহ দিচ্ছি। ভোগান্তি নেই, সময় ও খরচ কম বলে আমরা আমদানিতে উৎসাহ পাচ্ছি।’
আরো পড়ুন-ভারত থেকে আসলো ‘প্রথম কমার্শিয়াল’ কন্টেইনার ট্রেন
আরো পড়ুন-‘রেল কার্গোতে’ পণ্য আমদানিতে আগ্রহী ব্যবসায়ীরা
###