নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতিসংঘে সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন। গত রোববার বিকালে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইটে প্রধানমন্ত্রী সফরসঙ্গীদের নিয়ে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন।
১৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগ দিতে হেলসিংকি হয়ে নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কে যাওয়ার পথে হেলসিংকিতে তিনি দুই দিনের যাত্রাবিরতি করেন।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর ইতালি সফরের দেড় বছর পর এটি প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর। যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন তিনি।
২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণের অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী বিগত বছরগুলোর মতো এবারও বাংলায় ভাষণ দেবেন।
এ ছাড়া ২০ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের একটি ছোট দলের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি একটি গাছের চারা রোপণ করবেন এবং বঙ্গবন্ধুর জš§শতবার্ষিকী উপলক্ষে তার সম্মানে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে ইউএন গার্ডেনে একটি বেঞ্চ উৎসর্গ করবেন। বিকালে ‘সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশন নেটওয়ার্ক’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি।
২১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ বিতর্কের উদ্বোধনী অধিবেশন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কর্তৃক আয়োজিত ‘বিজনেস গোলটেবিল: ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ডারবান ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন গ্রহণের ২০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সাধারণ পরিষদের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন। এ ছাড়া তিনি ‘হোয়াইট হাউস বৈশ্বিক কভিড-১৯ শীর্ষ সম্মেলন: মহামারি সমাপ্তি এবং আরও ভালো অবস্থা গড়ে তোলা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
একই দিন বিকালে প্রধানমন্ত্রী ‘রোহিঙ্গা সংকট: একটি টেকসই সমাধানের জন্য করণীয়’ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং সেখানে আগে রেকর্ড করা বক্তৃতা দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
২৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সুইডিশ মিশন আয়োজিত ‘জাতিসংঘের সাধারণ কর্মসূচি: সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের পদক্ষেপ’ শীর্ষক নেতাদের নেটওয়ার্কের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। জাতিসংঘের মহাসচিব কর্তৃক আহ্বান করা ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দশক কর্মসূচির অংশ হিসেবে খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেট ফ্রেডেরিকসেন, বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিজ মিয়া আমোর মোটলি কিউসি, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, নেদারল্যান্ডসের রানী ম্যাক্সিমা, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ ও ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট এনগুয়েন জুয়ান ফাইক।
এ ছাড়া তিনি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন। জাতিসংঘ অধিবেশন ও নিউইয়র্কে অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার পর প্রধানমন্ত্রীর ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ওয়াশিংটন ডিসি সফরের কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে প্রধানন্ত্রী ৩০ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন এবং হেলসিংকিতে যাত্রাবিরতির পর ১ অক্টোবর দেশে ফিরবেন।