নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার নতুন নয়টি কর অঞ্চলে উচ্চমান সহকারী ও প্রধান সহকারী নিয়োগে ‘স্থিতাবস্থা’ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বুধবার (৫ জুন) বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিন্নাত হক এর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথক দুইটি রিটের ফলে এই স্থিতাবস্থা দিয়েছেন। কর অঞ্চলগুলো হলো-১৬, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪ এবং ২৫। আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
এর আগে ৩০ মে বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট ঢাকার ১০টি কর অঞ্চলে ‘প্রধান সহকারী’ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। একইসঙ্গে ওই ১০ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন আদালত। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ঢাকার কর অঞ্চল-১৬, ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২১, ২২, ২৩, ২৪ এবং ২৫ এর কর কমিশনারের কার্যালয় সম্প্রতি এসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সংশ্লিষ্ট সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সেলিম আযাদ।
এ বিষয়ে আইনজীবী মাসুদ রানা সাংবাদিকদের বলেন, ২৬ মে রোববার রিট করা হয়েছে। কমন নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯ অনুযায়ী আয়কর বিভাগে উচ্চমান সহকারী থেকে প্রধান সহকারী পদে পদোন্নতির মাধ্যমে এই পদ পূরণ করা হয়। কিন্তু আয়কর বিভাগ তা অমান্য করে ১০টি কর অঞ্চল অন্তত ২০০ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এসব নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি চ্যালেঞ্জ করে ১০ জন পদোন্নতি প্রত্যাশী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। আদালত শুনানি নিয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন এবং রুল জারি করেছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
কর বিভাগের কর্মচারীদের দাবি, আয়কর অফিসে ‘প্রধান সহকারী’ পদটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সার্কেলের যাবতীয় রিপোর্ট প্রধান সহকারী তৈরি করেন। ফলে পদটি শতভাগ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হয়। জনপ্রশাসনের কমন নিয়োগ বিধিমালা ও আয়কর বিভাগের বিধিমালা অনুযায়ী, প্রধান সহকারী পদটি পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করতে হবে। কাস্টমস বিভাগ এই নির্দেশনা পুরোপুরি মেনে পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করছে। আয়কর বিভাগের কয়েকটি কর অঞ্চলও একই বিধিমালা অনুসরণ করছে। কিন্তু নতুন কর অঞ্চলসমূহ এই নিয়ম মানছে না। না মেনে ইতোমধ্যে বেশিরভাগ নতুন কর অঞ্চল প্রধান সহকারী পদে সরাসরি নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। কর্মচারীদের দাবি, প্রধান সহকারী সরাসরি নিয়োগ হলে পদোন্নতির পথ বন্ধ হয়ে যাবে।
অপরদিকে, হাইকোর্টের নির্দেশ মোতাবেক কর অঞ্চল-২০ ও কর অঞ্চল-২১ কর্মচারী (১৩ থেকে ২০তম গ্রেড) নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করেছে। কর অঞ্চল-২০ এর লিখিত পরীক্ষা ১ জুন হওয়ার কথা ছিলো। কর অঞ্চল-২১ এর লিখিত পরীক্ষা ৮ জুন শনিবার হওয়ার কথা ছিলো। বুধবার (৫ জুন) কর অঞ্চল-২১ এর উপ কর কমিশনার (সদর দপ্তর) ও বিভাগীয় নিয়োগ প্রদান কমিটির সদস্য সচিব মো. মেহেদী মাসুদ ফয়সাল সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।