‘প্রমোদ ভ্রমণে’ যাচ্ছেন নায়েমের ২০০ কর্মকর্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি খরচে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) প্রায় ২০০ জন কর্মকর্তা কক্সবাজারে ‘প্রমোদ ভ্রমণে’ যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫ দিনের জন্য তারা সেখানে যাচ্ছেন। যাতায়াতের জন্য নভোএয়ারের একটি উড়োজাহাজ ও বিলাসবহুল এসিবাস এবং কক্সবাজারে পাঁচতারকা হোটেল রিজার্ভ করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, চলমান ও আসন্ন আর্থিক সংকট মোকাবিলায় সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন ও প্রধানমন্ত্রীর পুনঃপুন নির্দেশনা অগ্রাহ্য করে প্রশিক্ষণের নামে ৫ দিনের এ বিলাসবহুল প্রমোদ ভ্রমণের আয়োজন করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান নায়েম। তবে ‘প্রশিক্ষণ’ হলেও এ পাঁচ দিনে কোনো ক্লাস-সেশন নেই। তিন দিন কেবল ঘোরাফেরা, হোটেলে কালচারাল পার্টি ও বারবিকিউ নাইট, গালা নাইট প্রভৃতি অনুষ্ঠিত হবে। পরের দুদিন প্রশিক্ষণার্থীরা ইচ্ছেমতো যেখানে খুশি যেতে পারবেন, যা খুশি করতে পারবেন এমন ঘোষণা দেয়া হয়েছে বলে কয়েকজন অংশগ্রহণকারী শেয়ার বিজকে জানিয়েছেন। সরকার যেখানে কৃচ্ছ্রসাধনে বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় স্থগিত রেখেছে এবং বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধসহ অন্যান্য ভ্রমণকেও নিরুৎসাহিত করছে, সেখানে সরকারি কোষাগারের বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় করে এমন প্রমোদ ভ্রমণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জানা গেছে, নায়েমে অনুষ্ঠিত একটি প্রশিক্ষণ ব্যাচের প্রশিক্ষণার্থীদের একাডেমিক প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পথে। কিন্তু সম্প্রতি ভ্রমণ খাতে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় না করে সাশ্রয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করায় তড়িঘড়ি করে ৫ দিনের এ সফর আয়োজন করেছে অতি আগ্রহী কয়েকজন। সব প্রশিক্ষণার্থীও ওই ভ্রমণে যাচ্ছেন না। তাদের মধ্যে কয়েকজন এই ট্যুরকে ‘হানিমুন ট্যুর’ বলে অভিহিত করেছেন। তাদের অভিযোগ, এখানে প্রশিক্ষণে এসে ৮ থেকে ১০টি পরকীয়া জুটি গড়ে উঠেছে। এই ট্যুরে মূলত তাদেরই সুবিধা হবে, প্রশিক্ষণ নাম দিলেও এতে কোনো প্রশিক্ষণ নেই। প্রশিক্ষণে এসে পরকীয়ার কথা পরিবার জেনে ফেলার জের ধরে একজন প্রশিক্ষণার্থীর ইতোমধ্যে ডিভোর্স চূড়ান্ত পর্যায়ে বলে তারা জানান।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমির (নায়েম) মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মো. নিজামুল করিম শেয়ার বিজকে বলেন, ‘প্রমোদ ভ্রমণের কোনো সুযোগ

 নেই। আমাদের ফাউন্ডেশন কোর্সে স্টাডি ট্যুর আছে, স্টাডি ট্যুরে যারা যায়; ওদের নিজস্ব খরচে যায়। আমার কোঅর্ডিনেশনে ১৬০ জনের ট্রেনিং আছে, তাদের সঙ্গে কোঅর্ডিনেশন কমিটির ৫ জনসহ মোট ১৬৫ জন। নায়েম থেকে কোনো টাকা দেয়া হবে না। নিজেদের খরচে যাচ্ছে। সরকারি টাকায় যাওয়ার তথ্য সঠিক নয়।’

অভিযোগের বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘নায়েমের ডিজির সঙ্গে কথা বলুন। এটি তার দেখার বিষয়।’ আপনার জানা রয়েছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ডিজির সঙ্গে কথা বলে জেনে নেব।’