প্লাস্টিকজাত পণ্য জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য বড় হুমকি

মাছুম বিল্লাহ ভূঞা: আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অপরিহার্য অংশগুলোর একটি প্লাস্টিক। প্লাস্টিকজাত পণ্য ছাড়া জীবন অচল। বিভিন্ন আকার ও সহজলভ্য এবং কম খরচে হাতের কাছে সহজে পাওয়া যাওয়া কারণে প্লাস্টিকজাত পণ্যের ব্যবহার প্রতিদিনই বাড়ছে। আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি সামগ্রী তৈরি হচ্ছে প্লাস্টিক দিয়ে, যেমনÑচেয়ার, টেবিল, আলমারি ইত্যাদি। এছাড়া প্লাস্টিক পানির বোতল, কোমল পানীয়ের বোতল, খাবারের প্যাকেট বা মোড়ক হিসেবে প্লাস্টিকজাত পণ্যের জয়জয়কার। একবার ব্যবহার (ওয়ানটাইম ইউজ) করা প্লাস্টিক জাত পণ্যগুলোই হচ্ছে মূল সমস্যা; যা আমাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্লাস্টিক জাত পণ্য শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বজুড়েই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সুস্থ থাকলে হলে স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি পরিবেশকেও ভালো লাখতে হবে। প্লাস্টিকজাত দ্রব্য শুধু আমাদের পরিবেশেরই ক্ষতি করছে তাই শুধু নয়, এটি মানবস্বাস্থ্যের জন্যও ব্যাপক ক্ষতির কারণ হিসেবে চিহ্নিত। প্লাস্টিকজাত পণ্য ব্যবহার করে আমরা নিজেরাই মরণ ডেকে আনছি। এসব পণ্য ব্যবহার করে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন রোগ-ব্যাধিতে, সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে পরিবেশদূষণ। বিশেষ করে পানি, মাটি, জলদ্বার, জলজ পরিবেশ, নদী-নালা ও সামুদ্রিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্লাস্টিকজাত দ্রব্য পচে মাটির সঙ্গে মিশতে সময় লাগে কমপক্ষে ৪০০ বছর। এমনকি মেশার পরও তা ফসলি জমির মাটির উর্বরতা নষ্ট করে। এটি ড্রেনেজ ব্যবস্থার ও খালের পানি চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং এগুলোকে অচল করে দেয়। প্লাস্টিকজাত পণ্য ঢাকাসহ বড় শহরের জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্লাস্টিক বর্জ্য যত্রতত্র ছুড়ে ফেলার ফলে নালা-নর্দমা, খাল-বিলের পানি প্রবাহ বন্ধ হয়, যার নেতিবাচক প্রভাব ঢাকা শহরের রাস্তায় বৃষ্টির পানি আটকে বন্যার মতো জলাবন্ধতা দেখে দিচ্ছে। ঢাকা শহরে বছরের প্রায় ১৪ মিলিয়ন প্লাস্টিক ব্যাগ ব্যবহার করা এবং বর্তমানে ঢাকা শহরে প্রতিদিন ৬৮১টন প্লাস্টিকের বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এসব প্লাস্টিক ব্যবহারে পর ছুড়ে ফেলার ফলে জলাভূমিতে গিয়ে জমা হয়, ফলে মিঠা পানি ও সামুদ্রিক জীবের জীবন বিপন্ন হয়।

বাংলাদেশে বছরের প্রায় ৮ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। যার মধ্যে ২ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য নদী-নালার মাধ্যমে পতিত হচ্ছে সমুদ্রে। অনেক পশু, পাখি ও সামুদ্রিক প্রাণী এসব প্লাস্টিকজাত দ্রব্য খেয়ে প্রতিনিয়তই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। এসব কারণে ২০২৩ সালে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছেÑ ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’। তার পূর্বেও জাতিসংঘ ২০১৮ (খ্রি.) বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছিল, ইবধঃ ঞযব চষধংঃরপ বা ‘প্লাস্টিকে বর্জন করুন’। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার তখন প্রতিপাদ্য করেছিল প্লাস্টিক পুনঃব্যবহার করুন, না পারলে বর্জন করুন; যা কারণে কিছু মানুষ প্লাস্টিকজাত পণ্য পুনঃব্যবহারের কথা বলেন, এখন প্রশ্ন আসতে পারে, রিসাইকেলিং বা পুনঃব্যবহার স্বাস্থ্যসম্মত বা পরিবেশবান্ধব কি? যদি স্বাস্থ্যসম্মত বা পরিবেশবান্ধব না হয়, তাহলে আমরা প্লাস্টিকজাত পণ্য পুনঃব্যবহার করব কেন? তবে কিছু কিছু প্লাস্টিক পণ্য পুনঃব্যবহার করতে পারি, যেমন প্লাস্টিক চেয়ার, টেবিল ইত্যাদি।  

আমরা প্রতিনিয়ত যেসব প্লাস্টিকজাত পণ্য (যেমনÑ প্লাস্টিক বোতল, কাপ, গ্লাস, প্লেট, চামচ, খাবারের বক্স ইত্যাদি) থেকে সরাসরি খাদ্য বা পানীয়র সঙ্গে মুখে দিই বা খাবারের প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের সরাসরি ক্ষতি করছে। প্লাস্টিকজাত পণ্য তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। যেমন বিপিএ, নিকেল, ইথাইল বেনজিন ইত্যাদি। এক গবেষণা তথ্য মতে জানা যায়, খাবার ও পানীয় প্যাকেট বা বোতলজাত করতে যেসব প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়, সেসব প্লাস্টিকের মূল উপাদান থ্যালেট বা ডাই-এথিহেক্সিলপথ্যালেট। এসব রাসায়নিক উপাদান মানব শরীরের ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি সৃষ্টি করে। তাছাড়া তাপের সংস্পর্শে এলে প্লাস্টিকজাত পণ্যে জমে থাকা এসব রাসায়নিক পদার্থ দ্রুত বিক্রিয়া করে খাদ্য ও পানীয়র সঙ্গে মানব শরীরে প্রবেশ করে। ফলে আমরা স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ি। অনেকেই ফুড গ্রেডের কথা বলে থাকেন। যেমন ১, ২, ৩, ৪ ইত্যাদি নাম্বার দেয়া ফুড গ্রেড প্লাস্টিকপণ্য ব্যবহার করা যাবে। ব্যাপারটা যেন এমনÑ বিষ একবার, দু’বার, তিনবার, চারবার খাওয়া বা পান করা স্বাস্থ্যসম্মত; পরেরবার থেকে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে। তাই নয় কি? প্লাস্টিকজাত পণ্য ভেতরে রাখা খাবার প্লাস্টিকের মধ্যে থাকা ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গে বিক্রিয়া করে খাবারকে দূষিত করে; যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। যেসব প্লাস্টিকজাত পণ্য আমরা সরাসরি মুখে দিই অথবা পানীয় বা খাবারের প্রক্রিয়াজাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের সরাসরি ক্ষতি করছে, সেসব প্লাস্টিক পণ্য পুনঃব্যবহার দূরে থাক, ব্যবহারই করা যাবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের সায়েন্স ম্যাগাজিনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি বছর ৫০ হাজার কোটি প্লাস্টিক ব্যাগ, ৪৮ হাজার কোটি পানীয় বোতল উৎপাদন করা হয়। সারা বিশ্বে প্রতি মিনিটে ১০ লাখ বোতল বিক্রি হয়। বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ২৪ হাজার টন বর্জ্য তৈরি হয়, তার মধ্যে প্লাস্টিক বর্জ্য প্রায় ১ হাজার ৭০০ টন এবং বছরে প্রায় ৩ লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উš§ুক্ত পরিবেশে ফেলা হচ্ছে। এক কোটি ৩০ লাখ মেট্রিক টন প্লাস্টিক আবর্জনা সমুদ্রে পড়ে সামুদ্রিক পরিবেশ দূষিত করছে। ফলে ১০ কোটি সামুদ্রিক প্রাণী প্রতি বছর প্লাস্টিক দূষণের শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে। বছরের প্রায় ৮০ লাখ টন প্লাস্টিকজাত বর্জ্য সাগরে পতিত হচ্ছে, যদি প্লাস্টিকজাত পণ্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা না হয়, তবে ২০৫০ সালে সমুদ্রে মাছের চেয়ে প্লাস্টিক বর্জ্যরে পরিমাণ অনেক বেশি হবে। অনেক সামুদ্রিক মাছ খাদ্য হিসেবে মাইকো প্লাস্টিক গ্রহণ করছে; যা আমরা খেয়ে ক্যানসারসহ বিভিন্ন রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছি। ‘আর্থ ডে নেটওয়ার্ক’-এর তথ্য মতে, বাংলাদেশ বিশ্বের ১০তম প্লাস্টিক দূষণকারী দেশ। প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনে প্রতি বছর ১ কোটি ৭০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল পোড়ানো হয়। এই প্লাস্টিকপণ্য তৈরি করার সময় বাতাসে মিশছে ৩০ মিলিয়ন টন কার্বন ডাই-অক্সাইড। এ ছাড়া উৎপন্ন হচ্ছে অনেক সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড ইত্যাদি বিষাক্ত গ্যাস। এসব ক্লোরোফ্লোরো কার্বন জাতীয় বিষাক্ত গ্যাসগুলো ওজোন স্তর ক্ষতির জন্য দায়ী। ওজোন স্তর ক্ষতির কারণে ভূ-পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে হুমকির মুখে পড়ছে উদ্ভিদ এবং প্রাণীকূল। তাছাড়া এসব জ্বালানি তেল সংগ্রহ করতে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে পশ্চিমা আগ্রাসনের শিকার হয়েছে।

যদিও অনেক প্লাস্টিক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিনিয়ত বিভ্রান্তিমূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। অমুক, অমুক প্লাস্টিকজাত পণ্য বিসফেনলে (বিপিএ) মুক্ত। অনেকেই সন্দিহান বিসফেনলে (বিপিএ) মুক্ত কোনো প্লাস্টিক পণ্যের অস্তিত্ব আছে কি না। প্লাস্টিক বর্জ্য যত্রতত্র থেকে অপসারণ করতে সরকারকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। অপসারণের পর আবার এসব প্লাস্টিক বর্জ্য পোড়ালে কার্বন ডাই-অক্সাইড, সালফার ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনো-অক্সাইড ইত্যাদি বিষাক্ত গ্যাস বাতাসে মিশে বাতাসকে দূষিত করে। এক কথায় বলতে গেলে প্লাস্টিকজাত দ্রব্য ‘শাকের করাতের’ মতো বলা চলে। তাই প্লাস্টিক পণ্য রিসাইকেলিং বা পুনঃব্যবহার করা নয়, বর্জন করাই অধিক যুক্তিযুক্ত, বিশেষ করে একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিকজাত পণ্য।

যেখানে প্লাস্টিক সেখানে সমস্যা। এটা সত্যিই প্লাস্টিকের কারণে দূষণ বাড়ছে। তবে প্লাস্টিক আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে গেছে। প্লাস্টিকজাত পণ্য প্রায় সব কাজেই ব্যবহƒত হয়। তাই চাইলেও আমাদের রাতারাতি সব প্লাস্টিকজাত পণ্য থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নয়। তবে আমরা ইচ্ছা করলে একবার ব্যবহার (ওয়ানটাইম ইউজ) করা প্লাস্টিকজাত পণ্যগুলো সহজেই বর্জন করতে পারি।

প্লাস্টিকের ব্যাগের (থলে) বিকল্প হিসাবে পাটের ও কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করতে পারি। তাছাড়া পাটের ছোট ছোট থলে বা ব্যাগ আমরা ব্যবহার করতে পারি। সারা বিশ্বেই প্লাস্টিকের বিকল্প পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে পাটজাত ব্যাগ বা পণ্য। আমরা ফ্যাশনের জন্যও এসব পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহার করতে পারি। পানির বোতল, কাপ, গ্লাস, প্লেট, চামচ, খাবারের বক্স, স্ট্র  প্রভৃতি পণ্য অ্যালুমিনিয়াম, স্টিল, কাঁসা, পিতল, কাচ অথবা আমাদের ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈজসপত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। পানির বোতল প্লাস্টিকের না হয়ে ধাতব, বাঁশ বা কাচের হতে পারে।

সমুদ্রের প্লাস্টিকজাত দ্রব্যের দূষণ রোধে ৬ ডিসেম্বর ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে টহরঃবফ ঘধঃরড়হং ঊহারৎড়হসবহঃ চৎড়মৎধসসব (টঘঊচ) আয়োজিত এক সভায় ১৯৩ দেশের প্রতিনিধি সমুদ্রের পানিতে প্লাস্টিক দূষণ অবসানের জন্য জাতিসংঘের প্রণীত রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেন, স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে আমাদের বাংলাদেশও রয়েছে। বিভিন্ন দেশে (ওয়ানটাইম ইউজ) একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিকজাত পণ্যকে পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে দেখা হয়। ইতোমধ্যে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ান, ব্রিটেনসহ বিশ্বের অনেক দেশে প্লাস্টিকজাত পণ্যের ব্যবহার কমাতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়Ñ সিকিম সরকার যে কোনো অনুষ্ঠানে প্লাস্টিক খাবার বক্স, বোতলজাত পানি ব্যবহার নিষিদ্ধ করে, বিগত ১ জানুয়ারি ২০১৭ হতে দিল্লি সরকার সব ধরনের প্লাস্টিক বোতলের ক্রয়, বিক্রয়, ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন। আফ্রিকার দেশ কেনিয়া ও রুয়ান্ডার রাজধানীর কিগালিতে সব ধরনের সকল ধরনের একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিক বোতল, প্লেট, বাটি, খাবার বক্স, কাপ, গ্লাস, চামচ, স্ট্র  প্রভৃতি ক্রয়, বিক্রয়, ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। শ্রীলংকায় স্টাইরিফোম ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কোস্টারিকায় ২০২১, ভারত সরকার ২০২২ সালের পর সকল ধরনের একবার ব্যবহার করা (ওয়ানটাইম ইউজ) প্লাস্টিকের বোতল, প্লেট, বাটি, খাবার বক্স, কাপ, গ্লাস, চামচ, স্ট্র  প্রভৃতি কেনাবেচা, ব্যবহার নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

বিশ্ব একসময় প্লাস্টিকজাত পণ্যদ্রব্য ছাড়াই চলেছিল। জনসচেতনতা এবং আইনের প্রয়োগ করে প্লাস্টিকজাত পণ্য বর্জন সম্ভব। জনসচেতনতার অভাবে আমরা অনেক কিছুতেই পিছিয়ে পড়ি। জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে নাগরিক দায়িত্ববোধ জাগ্রত করা প্রয়োজন। এসব পণ্যের বিকল্পপণ্য আমাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে। বিকল্পপণ্য কম মূল্যে মানুষের হাতের কাছে পৌঁছানো গেলে অনেকাংশেই প্লাস্টিকজাত পণ্যের দূষণ কমাতে পারব। পরিবেশবান্ধব পণ্যে তৈরি এবং সহজলভ্য হলে মানুষ প্লাস্টিকজাত পণ্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে।

এই প্লাস্টিকজাত পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করা না গেলে বুড়িগঙ্গা নদীর মতো অন্য নদীগুলোও মরে যাবে এবং অনেক জলাভূমি ও জলাধারের জীব-বৈচিত্র্য ধ্বংস হয়ে যাবে। এ জন্য আমাদের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে সমস্যার সমাধান করতে হবে। পরিবেশ ভালো না থাকলে আমরা ভালো থাকতে পারব না। আগামী প্রজšে§র জন্য একটি সুন্দর বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে হলে প্লাস্টিকজাত দ্রব্যের ব্যবহার বন্ধে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। প্লাস্টিকজাত পণ্যের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে। যেভাবেই হোক জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং পরিবেশকে বাঁচাতে হলে প্লাস্টিকজাত পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। জনসচেতনতা তৈরি করে এবং আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে প্লাস্টিকের দূষণ হাত থেকে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশকে রক্ষা করতে পারি। অ্যালুমিনিয়াম, কাচ, স্টিল, কাঁসা, পিতলের ও আমাদের ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈজসপত্র ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ হই। সবাই সচেতন হলে জনস্বাস্থ্য রক্ষার সঙ্গে পরিবেশে, প্রতিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষা পাবে।

আইনজীবী

masumbillahlaw06@gmail.com