ফটিকছড়িতে ড্রাগন ও মাল্টা চাষে সফল দুই ভাই

ওবাইদুল আকবর রুবেল, ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম): ইউটিউবে ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার শৌখিন চাষি মঈনুল ইসলাম ও তার ভাই প্রবাসী আব্দুর রহিম গড়ে তুলেছেন পাঁচ একর জমিতে মাল্টা ও ড্রাগনের বাগান। মিশ্র ফল চাষে তারা সফলতাও পেয়েছেন।

প্রথমে তারা উপজেলার দাঁতমারা ইউনিয়নের ইউনুস গার্ডেন থেকে ড্রাগন ও মাল্টা ফলের চারা এনে পাইন্দং ইউনিয়নের বেড়াজালী এলাকার নিজস্ব পাহাড়ি ঢালু তিন একর জমিতে চাষ শুরু করেন। পরে পরিচর্যার মাধ্যমে আলোর মুখ দেখে আরও দুই একর জমিতে ড্রাগন ও মাল্টার চারা রোপণ করে বাগানের পরিসর বাড়ান। এ ছাড়া একই জমিতে লেবু, আমসহ মৌসুমি বিভিন্ন ফলের চাষ করেছেন তারা।

সম্প্রতি সরেজমিনে উপজেলার পাইন্দং ইউনিয়নের বেড়াজালী এলাকায় মঈনুল ইসলামের বাগান ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় পাঁচ একর জমিতে গড়ে ওঠা বাগানের চারদিকে সবুজের সমারোহ। সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে ড্রাগনগাছ ও মাল্টাসহ বিভিন্ন জাতের মৌসুমি ফল। সবুজ গাছে শোভা পাচ্ছে গোলাপি, লাল আর সবুজ ফল।

নিয়মিত পরিচর্যা সেচ ব্যবস্থা ও জৈব সার ব্যবহারের ফলে বাগানের প্রতিটি মাল্টা গাছে থোকায় থোকায় যেমন ফল ধরেছে, তেমনি ড্রাগন ও পেঁপে গাছেও ঝুলছে ফল। বারি মাল্টা-১ গ্রিন জাতের সুমিষ্ট একেকটি মাল্টার ওজন প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম। চাহিদা ভালো হওয়ায় বাগান থেকেই এ মাল্টা পাইকারিতে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রির কথা জানান মঈনুল ইসলাম। বাগানের প্রতিটি পিলারের সঙ্গে রয়েছে তিন-চারটি ড্রাগন গাছ। এরকম প্রায় শতাধিক পিলার রয়েছে বিশাল এ বাগানে। প্রতিটি ড্রাগন গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে লাল রঙের ড্রাগন।

মঈনুল ইসলামের মতো লাভ ও ফলন ভালো দেখায় এলাকার অনেকেই এখন এ মাল্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। এলাকাবাসী ও নতুন উদ্যোক্তরাও প্রতিদিন দেখতে আসেন এ মাল্টা বাগানটি।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তা সয়ন বড়ুয়া বলেন, এ অঞ্চলের মাটিতে মাল্টা ও ড্রাগন চাষের উর্বর একটি জায়গা, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় মঈনুল ইসলামকে আমরা যতটুকু সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন দিয়েছি। আর কেউ যদি এ ধরনের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়, তাদের আমরা সহযোগিতা দেব।

জানা যায়, ঔষধি গুণে ভরপুর বিদেশি এক ফলের নাম ড্রাগন ফল। ক্যানসার থেকে শুরু করে ডায়বেটিসসহ নানা রোগের মহোষধ এই ড্রাগন ফল। এ ফল দেখতে যেমন লোভনীয়, খেতেও তেমনি সুস্বাদু। ঔষধি গুণে গুণান্বিত, রসালো ও মুখরোচক এই ড্রাগন ফলের বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ ফটিকছড়ি উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে। কৃষি অফিস বলছে, এ অঞ্চলের মাটি ড্রাগন চাষের জন্য উর্বর একটি জায়গা। এছাড়া বেড়েছে মাল্টাসহ অন্যান্য ফলের চাষাবাদ।