প্রতিনিধি, ফরিদপুর : ফরিদপুরের মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, মাহেন্দ্র, ভটভটি চলাচলের প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ডাকা ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এই সময়ে ফরিদপুরের সকল যাত্রীবাহী যানচলাচল বন্ধ থাকবে। সকাল থেকেই যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
রাজশাহী গামী যাত্রী আসমা বেগম বলেন, আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলাম। বাড়িতে ফিরে যাবো বলে বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি বাস চলছে না। ভেবে পাচ্ছিনা বাড়িতে যাবো কিভাবে।
রংপুর গামী দিনমজুর রাশেদ শেখ বলেন, কামলা দিতে ফরিদপুরে এসেছিলাম। সকালে বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে আসলে এসে দেখি বাস বন্ধ। বাড়িতে স্ত্রী অসুস্থ খবর পেয়ে যাচ্ছিলাম, এখন কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে রোগী দেখতে আসা রাশেদ বলেন, আত্মীয়ের অপারেশন হয়েছে গতকাল রাতে। দেখতে এসেছিলাম, এখন বাস বন্ধ বাড়িতে যাবো কিভাবে বিপদে পড়ে গেলাম।
ফরিদপুরের গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টারের আশফাক হোসেন বলেন, সকাল থেকে সকল গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। অগ্রিম টিকিট বিক্রি করছি। কিছু সময় পর কাউন্টার বন্ধ করে দিবো।
এদিকে ফরিদপুরে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ শহরের উপকন্ঠে কোমরপুরের আব্দুল আজিজ ইন্সটিটিউট মাঠে ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের অভিযোগ গনসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতেই এই ধর্মঘট।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া বলেন, এই সরকার যে বাধা সৃষ্টি করছে, তা জনগন মেনে নেবেনা। মানুষের ঢল নামবে সমাবেশে। ফরিদপুরের সমাবেশ সফলভাবে সম্পন্ন হবে। এই সরকারকে আমরা উচ্ছেদ করবোই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বিভাগীয় গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ফরিদপুরের বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠানের জন্য রাজেন্দ্র কলেজের মাঠ চেয়ে চিঠি দিলেও অনেক টালবাহানা করে আব্দুল আজিজ ইন্সটিটিউট মাঠে অনুমতি দেয়া হয়েছে। সেখানে নাকি আরেকটি দলের অঙ্গ সংগঠন দরখাস্ত করেছে। অথচ আমরা অনেক পূর্বেই সেই স্থানটি চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। এদিকে বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধা ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘট ডেকেছে। সমিতির নাম ব্যবহার করছে তবে পেছন থেকে সুতার টান টানছে সরকার। তারা বহু চেষ্টা করছে গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে। কোন বাধাবিঘ্ন প্রতিবন্ধকতা ফরিদপুরের এই গণসমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। কোন অবস্থাতেই কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেজন্য আমরা সকলে সতর্ক রয়েছি। আমরা চাই অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে এই গণসমাবেশ সফল হোক।
বিএনপি’র কেন্দ্রিয় কমিটির সহ-সভাপতি ব্যারিষ্টার ওমর ফারুক বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা যে সমাবেশগুলো করেছি, তার চেয়ে ফরিদপুরের সমাবেশে আরো বেশি লোক সমাগম হবে। আওয়ামী লীগ যত ষড়যন্ত্রই করুক না কেন আমাদের থামিয়ে রাখতে পারবেনা।
তিনি বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের দুই একদিন না খেয়ে থাকারও অভ্যাস আছে। তাই বাধাগ্রস্থ্য করে আমাদের সমাবেশকে থামিয়ে রাখা যাবে না। আ.লীগের ধর্মঘট করা লাগবে না, জনগন এতো হবে যে আমরাই ধর্মঘট করে দিবো। যে পরিমান লোক সমাগম হবে তাতে করে চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পরবে।
ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ মহাসড়কে থ্রি-হুইলার, মাহেন্দ্র বন্ধের দাবীতে আন্দোলন করে আসছি। এর আগেও আমরা বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার রাত ৮টা পর্যন্ত সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখা হচ্ছে।