শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ থেকে তার দেশকে প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছেন। পাশাপাশি ফিলিস্তিনিদের শরণার্থীদের জন্য নিবেদিত জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-তে অর্থায়ন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে শরনার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর: সিএনএন।
গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের এই দুই সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের করে আনা সংক্রান্ত নির্বাহী আদেশে সই করার কথা। তিনি এমন এক সময়ে এ নির্বাহী আদেশে সই করতে পারেন, যখন হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। একই সময় ট্রাম্প ইউএনআরডব্লিউএ-এর বিরুদ্ধে আরও একটি কার্যনির্বাহী আদেশে সই করার পরিকল্পনা করছেন। নেতানিয়াহু জাতিসংঘ এবং ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রবল সমালোচক। ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নেন। একই ধরনের সিদ্ধান্ত তিনি তার প্রথম মেয়াদেও নিয়েছিলেন। পরে বাইডেন প্রশাসন আবার যুক্তরাষ্ট্রকে এসব সংস্থা ও চুক্তিতে ফিরিয়ে আনেন।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্থান ট্রাম্পের জন্য নতুন কিছু নয়। কারণ প্রথম মেয়াদেও তিনি পরিষদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করেছিলেন। ২০১৮ সালে যখন ট্রাম্প প্রশাসন মানবাধিকার পরিষদ থেকে বেরিয়ে যায়, তখন জাতিসংঘে নিযুক্ত প্রতিনিধি নিক্কি হ্যালি বলেছিলেন, এই সিদ্ধান্তের কারণ ছিল জাতিসংঘের ‘ইসরায়েলবিরোধী পক্ষপাতিত্ব।’ পরিষদে ৪৭টি সদস্য রাষ্ট্র থাকে, যাদের চার বছরের জন্য নির্বাচিত করা হয়। এ পরিষদ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রও অন্তর্ভুক্ত। আগামী আগস্টে পরিষদের বার্ষিক পর্যালোচনা প্রকাশ করা হবে। ২০২০ সালে পরিষদের পর্যালোচনায়, বিভিন্ন দেশ যুক্তরাষ্ট্রকে মানবাধিকার উন্নত করার জন্য সুপারিশ করে। বিশেষ করে, জাতিগত বৈষম্য দূর করা এবং গুয়ানতানামো বে কারাগার বন্ধ করার সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
জাতিসংঘের বেশ কয়েকজন স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার বা বিশেষ দূত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজার জনগণের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ছিল ইউএনআরডব্লিউএ-র সবচেয়ে বড় দাতা। দেশটি প্রতিবছর ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিত। তবে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইসরায়েল হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইউএনআরডব্লিউএ অংশ নিয়েছে এমন মিথ্যা অভিযোগ তোলার পর বাইডেন প্রশাসন অর্থায়ন স্থগিত করে দেয়।
