নিজস্ব প্রতিবেদক : ফিলিস্তিনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাই এক হয়ে কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফিলিস্তিনিদের ভূমির অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার ওপরও তাগিদ দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবন গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ১৫০টি সেতু, ১৪টি ওভারপাস, স্বয়ংক্রিয় মোটরযান ফিটনেস পরীক্ষাকেন্দ্র, ডিটিসিএ ভবন, বিআরটিসির ময়মনসিংহ বাস ডিপো ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ময়মনসিংহের কেওয়াটখালী ও রহমতপুর সেতুর নির্মাণকাজ এবং সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-আহত ব্যক্তি পরিবারের মধ্যে ক্ষতিপূরণ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর: বাসস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যুদ্ধের বিরুদ্ধে, আমরা শান্তি চাই। ইসরাইল যেভাবে হামলা করে, বিশেষ করে হাসপাতালে হামলা করে নারী ও শিশুদের আক্রান্ত করছে, আমি প্রতিবাদ জানিয়েছি। ফিলিস্তিনি জনগণকে যেভাবে হত্যা করছে, তা সমর্থন করা যায় না। ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব জায়গা তাদের ছেড়ে দিতে হবে। এটা তাদের অধিকার। ইসরাইলের হামলায় নিহত ও আহতদের জন্য আমরা দোয়ার আয়োজন করছি। শুক্রবার সব ধর্মের মানুষের জন্য সব জায়গায় দোয়া হবে। আহতদের জন্য চিকিৎসা সামগ্রী, প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পণ্যসামগ্রী পাঠাব।’
তিনি মুসলিমদের নীরবতার সমালোচনা করে বলেন, সবাই এক হয়ে ফিলিস্তিনের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে হবে। অনেকে চুপ করে আছে, প্রতিবাদের সৎ সাহস নেই। যারা এই আক্রমণ করছে, তারা যদি আবার নাখোশ হয়। আবার দেশে আন্দোলন করে সরকার পদত্যাগের!
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বলেছি, এই যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। যে টাকায় অস্ত্র বানানো আর ধ্বংসাত্মক কাজে লাগায়, সেটি শিশুদের গড়ে তোলার কাজে লাগানো যেতে পারে। বিশ্বের উন্নয়ন হবে।’
এদিকে ওআইসির দেশগুলোর মধ্যে সব সমস্যা সমাধানের জন্য সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ওআইসির প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সমস্যা থাকলেও সংলাপের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান করা উচিত।
গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশে সৌদি রাষ্ট্রদূত এসা ইউসুফ এসা আলদুহাইলান সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী চলমান ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ঐক্যের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি হস্তান্তর করে জেদ্দায় ৬ থেকে ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় ‘ওআইসি কনফারেন্স অন উইমেন ইন ইসলাম’-এ অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরও একটি চিঠি হস্তান্তর করেন এবং ২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের ক্ষেত্রে তার দেশের পক্ষে বাংলাদেশের সমর্থন চাইলে প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
পাশাপাশি রাষ্ট্রদূত ‘এক্সপো-২০৩০’-এর আয়োজন করতে তার দেশের পক্ষে নতুন করে সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান।
বৈঠকে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন, বাংলাদেশ ‘ইমাম সম্মেলন’ আয়োজন করতে যাচ্ছে এবং তিনি ওই সম্মেলনে যোগদানের জন্য দুই পবিত্র মসজিদের ইমামদের আমন্ত্রণ জানান।
প্রধানমন্ত্রী আলদুহাইলানকে বলেন, বাংলাদেশ এরই মধ্যে ভারতের সঙ্গে মুদ্রা বিনিময় চালু করেছে এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গেও এটি করতে চায়। এ প্রসঙ্গে সৌদি রাষ্ট্রদূত তার দেশ বিষয়টি দেখবে বলে উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা দুই পবিত্র মসজিদের খাদেমকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের জনগণের হƒদয়ে সৌদি আরবের জন্য বিশেষ স্থান রয়েছে।
এ সময় আলদুহাইলান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।