Print Date & Time : 4 August 2025 Monday 7:37 pm

ফের উত্তপ্ত লাদাখে অনড় ভারত ও চীন

শেয়ার বিজ ডেস্ক : ফের উত্তপ্ত লাদাখ সীমান্ত। ভারত এবং চীনের মধ্যে নতুন করে কথার লড়াই শুরু হয়েছে। লাদাখ সীমান্তে সৈন্য বাড়াচ্ছে ভারত। চীনা সেনাদের ঠেকাতে তাদের সব রকম পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতাও দেওয়া হচ্ছে। গত সোমবার ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। খবর: ডয়চে ভেলে ও এনডিটিভি।

২৯ আগস্ট রাত থেকে ৩০ আগস্ট ভোর পর্যন্ত নতুন করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে প্যাংগং লেক অঞ্চলে। সোমবার এ বিষয়ে বিবৃতি জারি করেছিল ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। সোমবার রাতে চীনও বিবৃতি জারি করে বলেছে, ভারত স্থিতাবস্থা লঙ্ঘন করেছে।

ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্রের বক্তব্য, এত দিন প্যাংগংয়ের উত্তর প্রান্ত নিয়ে ভারত এবং চীনের মধ্যে বিতর্ক ছিল। এ বার দক্ষিণ প্রান্তে সংঘাত তৈরি করে ভারতীয় সেনার দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে চীন।

দু’দেশ দু’দেশের মতো করে যুক্তি সাজাচ্ছে। তবে ১৫ জুন গালওয়ানের সংঘাতের পর গত কয়েক মাসে ২৯ এবং ৩০ আগস্টের সংঘাতই সব চেয়ে বড়। এ সংঘাতকে কেন্দ্র করে নতুন করে কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হয়েছে। একদিকে চীন যেমন বিবৃতি দিয়ে ভারতের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছে। অন্য দিকে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্করও চীনকে বেশ চড়া সুরে হুশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রয়োজনে ভারত শুধু জবাব দিতে জানে তাই নয়, ইটের বদলে পাটকেলও ছুড়তে জানে। অর্থাৎ, ভারতীয় সেনাও যে আক্রমণাত্মক হতে পারে, সে কথা প্রকারান্তরে বলার চেষ্টা করেছেন তিনি।

৩০ আগস্টের পরে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং গোয়েন্দা বিভাগও লাদাখ নিয়ে বিশেষ বৈঠক করেছে। এক দিকে সামরিক বাহিনীর সব অফিসারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। অন্য দিকে এনএসএ অজিত ডোভাল গোয়েন্দা প্রধান এবং রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে। আরও শীতের শেষ পর্যন্ত চীন সীমান্তে পর্যাপ্ত সৈন্য মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বস্তুত, আগস্টের ঘটনার পর লাদাখে আরও সৈন্য মজুত করার পরিকল্পনাও হয়েছে। এ দিকে সোমবার চুসুলে ভারত এবং চীনের সেনার মধ্যে যে ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছিল, তা ফলপ্রসূ হয়নি বলে খবর। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, লাদাখ সমস্যা সহজে মেটার নয়। দু’দেশই বুঝে গিয়েছে, এ  পরিস্থিতি চলতে থাকবে। অতীতে ডোকলাম নিয়ে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ডোকলামের সঙ্গে এ বারের পরিস্থিতি তুলনীয় নয়। অনেকরই বক্তব্য, এভাবে ছোট ছোট ঘটনার মধ্য দিয়েই আপাতত দু’দেশ এগোবে। পাশাপাশি কূটনৈতিক আলোচনা চলতে থাকবে। তবে ছোট স্ফুলিঙ্গ থেকেও আগুন জ্বলার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে। যদি তা হয়, তা হলে পরিস্থিতি যে কোনো সময় অন্য দিকে মোড় নিতে পারে বলে অনেকেরই আশঙ্কা।