ফারুক আলম, লালমনিরহাট : তিস্তায় উজানের ঢল আর ভারি বৃষ্টিপাতে ফলে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।এতে নিম্নাঞ্চল ও তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর ) সকালে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২০ সে.মি. ওপরে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত প্লাবিত অঞ্চলে কোমড় পরিমাণ ছিলো।এর পর থেকে পানি কমতে থাকে।
৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৭টার পরে পানি কমে যায়।ভেসে ওঠে পলি-বালি পড়া আমনে ক্ষেত।
হঠাৎ বন্যার এই পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।ভাঙনের তীব্রতা দেখা দিয়েছে সদর উপজেলার চর গোকুন্ডায়।
ফের ভেঙে গেছে স্যানিটেশন,সংকটে গবাদীপশুর খাবার।এছাড়াও নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে লাগানো রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।হাঁটু সমান কাদা-পলিতে ডুগে গেছে আমনের ক্ষেত।স্খানীয়রা মনে করছেন,এমন অবস্থায় থাকলে,আগামী ৬মাস খাবার সংকটে পড়বে চরাঞ্চলের এসব মানুষ।
কৃষি বিভাগ বলছে, জেলায় সরকারি হিসাবে ৩৯৫ হেক্টর আমন ক্ষেত ডুবে গেছে।নতুন কোনো ফসল চাষ করতে পারছেনা। যাই রোপন করছে,ঘন বৃষ্টি বানে খেয়ে নিচ্ছে।
নদী ভাঙন রোধে আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মাণ করা হচ্ছে তীররক্ষা বাঁধ।এতে সুফল মিলবে হাজারো পরিবারের। তবে,বাঁধ নির্মানের ধীর গতীতে রয়েছে স্থানীয়দের ক্ষোভ।
এনামুল হক বলেন,নদীর পানি এই বাড়ে,এই কমে।নদীতে সব ভেসে নিয়ে গেলো।আজকাল করে বাধের কাছ হচ্ছেনা।আমরা দ্রুত বাঁধের কাজ চাই।বাঁধটা হলে,আমাদের ক্ষেতখামার রক্ষা পাবে।
পিয়ার জাহান ৭০ বলেন, খাবারদাবার কিছু নাই। নেতানেত্রীর দেখা নাই। প্রতি ঘরে ঘরে গলা পরিমাণ পানি হয়ে গেলো।কেউ একটা বিস্কুটও দিলোনা।
মশিয়ার রহমান বলেন,চরে এখন কিছু নাই। ধানের ওপর তিন ফুট বালু।এবার বন্যায় খুব ক্ষতি হলো।এবার ধান নষ্ট হলে,আগামী বছর না খেয়ে থাকতে হবে।
কৃষি বিভাগের উপপরিচালক হামিদুর রহমান বলেন,যে জায়গা গুলোতে কম পরিমান বালি পড়েছে,তাদেরকে মালচিং করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।মালচিং করলে,সেগুলো হবে।বেশি পরিমান বালি পড়েছে,সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।আমরা নজর রাখছি,অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রনোদনার আওতায় আনা হবে।
জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন,যেকোনো মোকাবেলা করার জন্য জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি আছে।চাহিদা মত বরাদ্দ দেয়া হবে।