শেয়ার বিজ ডেস্ক: গত ৭০ বছরে ফ্রান্সের ক্যাথলিক গির্জায় পাদ্রী এবং যাজকদের হাতে দুই লাখ ১৬ হাজারের বেশি শিশু যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশই ছেলে শিশু। গতকাল মঙ্গলবার এক নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে পাদ্রী এবং যাজকদের বিরুদ্ধে শিশু নিপীড়নের এ প্রমাণ মিলে। রোমান ক্যাথলিক চার্চে যৌন নিপীড়নের ঘটনার আড়াই হাজার পৃষ্ঠার এক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। খবর: রয়টার্স।
তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, চার্চের সাধারণ সদস্যদের হিসেবে ধরলে যৌন নিপীড়নের শিকার শিশুর সংখ্যা বেড়ে তিন লাখ ৩০ হাজার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। কমিশনের প্রধান জঁ-মার্ক সোভ বলেছেন, ‘নিপীড়নের এ পরিসংখ্যান অসহনীয়’।
প্রতিবেদন প্রকাশের পর ফ্রান্সের চার্চগুলো শিশু নিপীড়নের ঘটনাকে ‘লজ্জাজনক এবং ভীতিকর’ বলে উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়েছে। এ প্রতিবেদনকে ফ্রান্সের ইতিহাসে একটি টার্নিং পয়েন্ট বলে মন্তব্য করেছেন নিপীড়নের শিকার একজন। তিনি বলেছেন, ক্যাথলিক চার্চগুলোর কর্ম মৌলিকভাবে পুনর্মূল্যায়ন করার সময় এসেছে।
কমিশনের প্রধান জঁ-মার্ক সোভ বলেন, তারা দুই হাজার ৯০০ থেকে তিন হাজার ২০০ শিশু নির্যাতনকারী পাদ্রী এবং অন্যান্য যাজকের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন। এটি ন্যূনতম অনুমান।
তিনি বলেন, চার্চ, আদালত ও পুলিশের দলিলপত্রের আর্কাইভে পাওয়া তথ্য এবং যৌন নির্যাতনের শিকারদের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। প্রায় আড়াই বছর ধরে এক লাখ ১৫ হাজারের বেশি পাদ্রী ও অন্যান্য গির্জা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানো হয়।
বিভিন্ন দেশে কয়েকটি কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর ফরাসি ক্যাথলিক গির্জা কর্তৃপক্ষ ২০১৮ সালে তদন্তের আদেশ দিয়েছিল। জঁ-মার্ক সোভ বলেছেন, ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে ক্যাথলিক চার্চ ‘ভুক্তভোগীদের প্রতি গভীর এবং নিষ্ঠুর উদাসীনতা দেখিয়েছিল’।
আড়াই হাজার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে ‘বিশাল সংখ্যক’ ছিল বিভিন্ন ধরনের সামাজিক প্রেক্ষাপটের প্রাক-কিশোর বয়সের ছেলে। তদন্তে দেখা গেছে, ভুক্তভোগীদের ৬০ শতাংশই-পরবর্তী জীবনে তাদের মানসিক এবং যৌন জীবনে মারাত্মক ব্যাঘাতের শিকার হয়েছেন।