বেকার সমস্যার কারণে এদেশের যুবকরা হতাশায় পড়ে বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের দিয়ে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করিয়ে নিচ্ছে একশ্রেণির দুষ্কৃতকারী। উচ্চতর পড়ালেখা সম্পন্ন করে যখন তারা পরিবারে বোঝা হয়ে দাঁড়ায় এবং একটা চাকরির জন্য হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ায়, তখন তাদের কাছে জীবনের অর্থ বলে কিছু থাকে না। বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে না পারলে এই সমস্যা প্রকটভাবে ছড়িয়ে পড়বে। এদেশের তরুণ-তরুণীরা অত্যন্ত মেধাবী এবং সুযোগ পেলে তারা অনেক ভালো কিছু করে দেখাবে।
বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং করে দেশ ও দেশের গণ্ডির বাইরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে অনেকেই অর্থ উপার্জন করছে এবং এটাকে পেশা হিসেবে নিয়েছে। গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং, এসইও, কন্টেন্ট রাইটিং, ডেটা এন্ট্রি, ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট, এফিলিয়েট মার্কেটিং প্রভৃতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং এখন তুমুল জনপ্রিয় হয়েছে। এসব নতুন ধরনের কাজ তরুণ-তরুণীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারলে অবশ্যই এদেশের জন্য মঙ্গল হবে এবং বিশ্বব্যাপী কর্মক্ষেত্রের সুযোগ সৃষ্টি হবে। কিছু ভালো ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান থাকলেও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের নামে প্রতারণা করে যাচ্ছে এবং এতে অনেকেই সর্বস্বান্ত হচ্ছে। এমনও অভিযোগ আছে যে, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষকরা নিজেরাই ফ্রিল্যান্সিং করতে পারে না, কিন্তু তারা প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে। তাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস ) ফ্রিল্যান্সিংকে জনপ্রিয় করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। বিশেষ করে সংগঠনটির এসভিপি ফারহানা এ রহমানের প্রতিষ্ঠিত ইউওয়াই ল্যাবের ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কোর্সে স্কলারশিপের ব্যবস্থা এদেশের ফ্রিল্যান্সিংয়ে আগ্রহীদের জন্য সহজেই প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ক্ষেত্রবিশেষে তারা ১০০ শতাংশ পর্যন্ত স্কলারশিপ দিচ্ছে। বর্তমানে বহুল জনপ্রিয় ও চাহিদাসম্পন্ন কোর্সগুলো, যেমন প্রফেশনাল গ্রাফিক ডিজাইন, এসইও অ্যান্ড ডিজিটাল মার্কেটিং, ওয়েব ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ভিডিও এডিটিং প্রভৃতি কোর্স চালু আছে এবং সেইসঙ্গে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা আছে। সমাজে যারা আইটি খাতে ফারহানা এ রহমানের মতো উচ্চ পর্যায়ে আছেন, তারা এ রকম দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ নিলে এদেশের অনেক মেধাবী ও উদ্যমী তরুণ ফ্রিল্যান্সিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশ-বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে। ধারণা করা হচ্ছে, ফ্রিল্যান্সিং বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের দিক দিয়ে তৈরি পোশাক খাতকেও অতিক্রম করবে। আর এটা যদি সম্ভব হয়, তাহলে অবশ্যই আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে তা বড় অবদান রাখবে।
আরিফুর রহমান সুমন
সাভার, ঢাকা