ফ্লাইওভারে র‌্যাম্পের পিলারে কোনো ফাটল পাননি বিশেষজ্ঞরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের এমএ মান্নান ফ্লাইওভারে র‌্যাম্পের পিলারে কোনো ফাটল পাননি বিশেষজ্ঞরা। তবে হালকা যানবাহন চলাচল করতে পারবে, আপাতত ভারী যান নয়। গতকাল সকালে র‌্যাম্পটির নকশা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান ডিজাইন প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ডিপিএম) কনসালট্যান্টস লিমিটেডের বিশেষজ্ঞরা পরিদর্শন শেষে এ তথ্য জানান।

ডিপিএম কনসালটেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এমএ সোবহান বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাটলের মতো যেসব ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, তা মূলত কনস্ট্রাকশন জয়েন্ট। আর শাটারিংয়ের জন্য দেয়া ফোম বের হয়ে গেছে। এটা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে আমরা র‌্যাম্পটির পিলারসহ বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি। প্রাথমিকভাবে মনে হয়েছে, সেখানে কোনো ফাটল নেই। এ অবস্থায় হালকা যান চলাচলেও কোনো বাধা নেই। তবে আপাতত ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। এ বিষয়ে আরও গভীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এরপর পর্যবেক্ষণসহ প্রতিবেদন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) দেয়া হবে। ডিপিএম কনসালটেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এমএ সোবহানের নেতৃত্বে কারিগরি বিশেষজ্ঞ দলে আরও ছিলেন ডিপিএমের পরিচালক প্রকৌশলী শাহজাহান আলম ও সিনিয়র স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার সামি মোহাম্মদ রেজা।

এদিকে চট্টগ্রামে প্রথম ফাইওভার এমএ মান্নান ফ্লাইওভারের (বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার) আরাকান সড়কমুখী র‌্যাম্পের একটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে, এমন ছবি ফেসবুকে ছড়ালে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুর্ঘটনা এড়াতে সোমবার রাত থেকে র‌্যাম্পটিতে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে পরিদর্শনে গিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান প্রকৌশলীও বলেছেন, নির্মাণ ত্রুটির কারণেই ফাটল ধরেছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন মেয়র। তবে ফ্লাইওভারটির নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান সিডিএর দাবি, এটি ফাটল নয়, পিলারের জোড়া।

জানা গেছে, ২০১০ সালে যানজট নিরসনে নগরের শুলকবহর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকায় এমএ মান্নান ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। একই বছর জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। আর নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০১৩ সালের ১২ অক্টোবর। উদ্বোধনের পর ফ্লাইওভারটি কার্যকর না হওয়ায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আরাকান সড়কমুখী র‌্যাম্প নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ৩২৬ মিটার দীর্ঘ এবং ছয় দশমিক সাত মিটার প্রস্থ র‌্যাম্পটি নির্মাণ শেষে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়। র‌্যাম্পটিতে ১৪টি পিলার রয়েছে। এরপর ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর ফ্লাইওভারটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চসিককে বুঝিয়ে দেয় সিডিএ।