বংশী নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন

প্রতিনিধি, সাভার: ঢাকার ধামরাইয়ে বংশী নদীতে ড্রেজার (খননযন্ত্র) দিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় প্রশাসন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেও বন্ধ করতে পারছে না অবৈধ এই বালি উত্তোলন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ধামরাইয়ের সানোরা ইউনিয়নের বাসনা এলাকায় বংশী নদীতে দুটি ড্রেজার বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী মহল। বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য ও স্থানীয় নবযুগ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রবিউল করিম রুবেলের নেতৃত্বে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। এমনকি প্রশাসন ও এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে অবৈধ এই বালি উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। সরেজমিনে উপজেলার বাসনা এলাকায় গিয়ে বংশী নদীতে দুটি ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সত্যতা পাওয়া গেছে।
ড্রেজার চালক রশিদ জানান, স্থানীয় নেতা রুবেলের মালিকানাধীন ড্রেজারের তিনি একজন শ্রমিক। ঈদের এক সপ্তাহ আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে তাদের দুটি ড্রেজার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর আবারও দুটি ড্রেজার বসিয়ে তারা বালি উত্তোলন করেছেন। স্থানীয় একটি পুকুর ভরাট করে মাঠ তৈরির জন্য তারা বালি উত্তোলন করছেন বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে আনন্দ সরকার নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, এর আগে প্রশাসন ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দিলেও এর পরদিন থেকেই দেদার বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। এর কারণে তাদের বসতভিটা ও নদীপারের জমি ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে। নাছিমা বেগম নামে অপর একজন জানান, বালি উত্তোলনের কারণে নদীর পারে থাকা তার একমাত্র সম্বল বাড়িটি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
এদিকে এক কলেজছাত্রী অভিযোগ করেন, প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত বিকট শব্দে ড্রেজিং মেশিন চালানোয় তাদের পড়াশোনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের শুধু ড্রেজিং মেশিন পোড়ালে হবে না, অবৈধভাবে নদী থেকে বালি উত্তোলন স্থায়ীভাবে বন্ধ হোক, সেটাই তাদের প্রত্যাশা।
অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা রবিউল করিম রুবেল দাবি করেন, নদীতে কোনো ড্রেজার বসানো হয়নি। নদীর পাশে মালিকানাধীন জমিতে ড্রেজার চালাচ্ছেন। তবে এর আগে ভ্রাম্যমাণ আদালত ড্রেজার পুড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপার ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, এর আগে বংশী নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ঘটনায় একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে ড্রেজার মেশিন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঈদের আগে বাসনা এলাকাতেও অভিযান চালিয়ে ড্রেজার পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে একই স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলনের বিষয়টি তার জানা না থাকলেও পরে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।