পারভীন লুনা, বগুড়া: বগুড়ায় চলতি বোরো মৌসুমে কৃষক ব্রি-২৮ জাতের ধান লাগিয়ে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছিলেন। কিন্তু পাকা ধান কাটার আগেই কৃষকের মাথায় হাত, বাম্পার ফলনের স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে ‘মাজরা’ নামের এক পোকা। এ পোকার আক্রমণে ধূসর হয়ে গেছে একরের পর একর সদ্য পাকা ধান। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে জানিয়েছেন অনেক কৃষক।
বগুড়া সদরের কৃষক মো. রবিউল জানান, চার বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের ধান লাগান। বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে দীর্ঘ তিন মাস অনেক টাকা ব্যয়ে অনেক যত্নে ধানের বাম্পার ফলন পান। করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউনের এ দুর্ভোগেও বেশি ফলন দেখে আশায় বুক বাঁধেন। কিন্তু কদিন ধরে তাদের যত্নে লালন করা ধানে চোখের সামনে মড়কে পড়ছে দেখে দিশাহারা হয়ে পড়েন তারা।
ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে রাজাপুর ইউনিয়নের খামারকান্দী গ্রামের কৃষক বদি মিয়া এক বিঘা, সোনা মিয়া দেড় বিঘা, কাশেম এক বিঘা ও রবিউলের এক বিঘা জমিতে মাজরা পোকার আক্রমণে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। তারা অভিযোগ করে বলেন, মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের যথাযথ তদারকি নেই। তা না হলে সময়মতো পরামর্শ পেলে তাদের এ ক্ষতি হতো না। ধান পাকা দেখলেও ফলন ঘরে তোলার আগেই জমিতে পোকার আক্রমণে এ দৃশ্য কৃষক পরিবারগুলোয় করোনার লকডাউনে ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
বগুড়া সদর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, বগুড়া সদর এলাকায় কম সময়ে এ জাতের ধানের ক্ষেতে ফলন এসেছে প্রচুর। যারা নিয়ম জানেন, তারা সঠিক সময়ে সঠিক কীটনাশক প্রয়োগ করায় ক্ষেতে পোকা আক্রমণ করেনি। কিন্তু অসাবধানতার কারণে রাজাপুর ইউনিয়নের খামারকান্দী গ্রামসহ বিক্ষিপ্ত কয়েক এলাকায় কিছু জমির ধানে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে।
তিনি আরও জানান, খামারকান্দী-সহ অন্য এলাকায় পোকার আক্রমণের কথা জানতে পেরে সংশ্লিষ্টদের সেসব এলাকা পরিদর্শনে পাঠানো হয়েছে। ফলন ঠিক রাখতে কোন গ্রুপের কীটনাশক ছিটানো দরকার, তা সংশ্লিষ্ট কৃষকদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।