প্রতিনিধি, বগুড়া: বহু প্রতীক্ষার পর জিৎ ও মিমি চক্রবর্তী অভিনীত কলকাতার ‘বাজি’ সিনেমার মধ্য দিয়ে বগুড়ার মধুবন সিনেপ্লেক্স যাত্রা করল।
আকাশ সংস্কৃতির প্রভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া লেফটেন্যান্ট (অব.) এএম ইউনুসের মধুবন সিনেমা হলটি নতুন আঙ্গিকে মধুবন সিনেপ্লেক্সে রূপান্তর করেন তার ছেলে আর এম ইউনুস রুবেল।
জানা গেছে, ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট এএম ইউনুস ১৯৭৪ সালে বগুড়া শহরের চেলোপাড়া এলাকায় মধুবন সিনেমা হলটি প্রতিষ্ঠা করেন। ইবনে মিজান পরিচালিত ও শাবানা-ওয়াসিম অভিনীত ‘ডাকু মনসুর’ সিনেমা দিয়ে হলটির যাত্রা হয়।
হলটিতে এক হাজার দর্শক একসঙ্গে সিনেমা উপভোগ করতে পারতেন। বাবার সঙ্গে এ হলের দেখাশোনা করতেন আরএম ইউনুস রুবেল।
সর্বশেষ গত ২০১৭ সালে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমা প্রদর্শনের পর নানা কারণে হলের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়।
এরপর রুবেল মধুবন সিনেপ্লেক্স সংস্কারের উদ্যোগ নেন। সাড়ে তিন বছর কাজ শেষে প্রদর্শনের উপযোগী হয়। কভিড-১৯সহ নানা কারণে অনেকদিন উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি।
আর এম ইউনুস রুবেল জানান, এখন হলের আসন সংখ্যা ৩৩৯। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সাউন্ড সিস্টেম, নান্দনিক পরিবেশ, বিশ্বমানের প্রেক্ষাগৃহের অত্যাধুনিক সব সুবিধা এ হলে রয়েছে। দর্শকরা আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র উপভোগ করতে পারবেন। ৪২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২২ ফুট প্রস্থের থ্রিডি পর্দায় সিনেমা দেখা যাবে।
শুক্রবার তিনটি ও অন্য দিন চারটি শো প্রদর্শিত হবে।এখানে নারী দর্শকদের জন্য রয়েছে প্রসাধন কক্ষ।
পুরুষদের জন্য আলাদা বিশ্রামাগার, ফুডকোর্ট, জুসবার, কফিশপ ও পার্কিং সুবিধা রয়েছে। শুরুতে সিঙ্গেল স্ক্রিনে প্রদর্শন শুরু হলেও পরে এর সংখ্যা বাড়বে।
এছাড়া তিন ধরনের টিকিট বিক্রি হবে। গোল্ড ৩০০, প্রিমিয়াম ২০০ ও স্ট্যান্ডার্ড টিকিটের দাম ১০০ টাকা।
তিনি আরও জানিয়েছেন, বিজয়া দশমী উপলক্ষে ‘বাজি’ সিনেমা প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে মধুবন সিনেপ্লেক্সের যাত্রা শুরু হলো। তবে শিগগির তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সিনেপ্লেক্সের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
বগুড়ার প্রবীণরা জানিয়েছেন, বগুড়া শহরে ১০টিসহ সারা জেলায় মোট ৩৮টি সিনেমা হল ছিল। আকাশ সংস্কৃতি, ইন্টারনেট প্রযুক্তি চালুসহ নানা কারণে দর্শকরা সিনেমা হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। ফলে ইতোমধ্যে ৩১টি সিলেমা হল বিলুপ্ত হয়েছে।
শহরের সাতমাথায় মধু, মেট্রো ও মেরিনা সিনেমা হল, থানা রোডে উত্তরা, চারমাথায় বীথি, জাহাঙ্গীরাবাদ ক্যান্টনমেন্টে সেনা অডিটোরিয়াম এবং মাঝিড়া ক্যান্টনমেন্টে ছিল উল্লাস সিনেমা হল।
মধু, মেট্রো, মেরিনা হল ভেঙে সেখানে মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। সর্বশেষ বন্ধ হয়েছে নবাববাড়ি সড়কের বাম্বি সিনেমা হল।
বর্তমানে শহরে দুটিসহ জেলায় মোট সাতটি সিনেমা হল চালু থাকলেও সেগুলো চলছে ধুঁকে ধুঁকে। কভিডের কারণে দেড় বছর হলগুলো বন্ধ ছিল। কয়েক দিন আগে শহরের সোনিয়া হল চালু করা হলেও কাক্সিক্ষত দর্শক হচ্ছে না।