বগুড়ার চরাঞ্চলে দেখা দিচ্ছে আগাম বন্যা

পারভীন লুনা, বগুড়া: কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও আশেপাশের কয়েকটি জেলায় বন্যা হতে পারে বলে জানিয়েছে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ব্রহ্মপুত্রের পানি কুড়িগ্রাম দিয়ে ও তিস্তার পানি লালমনিরহাট দিয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করায় বন্যা শুরু হতে পারে বলে জানা গেছে।

এদিকে বগুড়ার যমুনা নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। ফলে যমুনার চরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে আগাম বন্যা। চরের সব ধরনের ফসল ডুবে গেছে। অনেক এলাকায় বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারিয়াকান্দির মথুরাপুর পয়েন্টে যমুনার পানি ১৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

গতকাল রোববার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ী, হাটশেরপুর, কাজলা কর্নিবাড়ী, বোহাইল ও ধুনট উপজেলার ভাণ্ডারবাড়ী ইউনিয়নের বেশকিছু চরে পানি প্রবেশ করেছে। চরের উর্বর জমিতে চাষ করা পাট, কাউন, আউশ ধান, মরিচসহ বিভিন্ন ফসলের জমি পানিতে ডুবে গেছে। বাড়ি-ঘরগুলোতে পানি প্রবেশ করতে শুরু করেছে। যমুনার পানি ১৮ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

চরের বাসিন্দা মোবারক আলি জানান, এবার বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই যমুনা নদীর পানি বাড়তে শুরু করায় আগাম বন্যা দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। সেটিই হওয়ার সমূহ আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানান তিনি।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কয়েকটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, যমুনার পানি নদীপাড়ের লোকালয়ে ঢুকতে শুরু করেছে। স্থানীয় লোকজন এরই মধ্যে পূর্বপ্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে ধান ও পাটক্ষেতে ঢুকতে শুরু হয়েছে।

গতকাল সারিয়াকান্দির মথুরাপাড়া, চন্দনবাইস্যা ও কালীতলা ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, গত সপ্তাহে যেসব স্থান শুকনা ছিণ, এখন সেসব এলাকা পাঁচ-ছয় ফুট পানির নিচে। এসব স্থানে আগে পানির উচ্চতা বৃদ্ধির পরিমাপক স্কেল বসানো থাকলেও এবার তা দেখা যায়নি। কালিতলা ঘাটসংলগ্ন দোকানি ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবার এ রকম সময়ে এসব স্থানে পরিমাপক স্কেল বসানো থাকলেও এবার এখন পর্যন্ত তা তাদের চোখে পড়েনি। তারা অভিযোগ করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তেমন কোনো তৎপরতা তাদের চোখে পড়েনি।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান জানান, গত শনিবার সারিয়াকান্দি উপজেলার মথুরাপুর পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বিপদসীমার সাত সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল রোববার ১৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।