Print Date & Time : 7 July 2025 Monday 3:37 pm

বগুড়ায় স্ত্রীকে হত্যার ২৬ বছর পর স্বামীসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

প্রতিনিধি, বগুড়া : বগুড়ায় স্ত্রীকে হত্যার ২৬ বছর পর স্বামীসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া তাদের।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হাবিবা মন্ডল এ রায় দেন। এসময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এ ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জেলার শেরপুর উপজেলার পালসন গ্রামের মৃত আরিফ উল্ল্যাহ ফকিরের ছেলে জিল্লুর রহমান, মৃত জহুরুল ইসলামের ছেলে গোলাপ হোসেন ও খারতাপাড়ার মফিজ উদ্দিনের ছেলে ফরহাদ মন্ডল। নিহত গৃহবধূর নাম চায়না খাতুন। তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত গোলাপ হোসেনের স্ত্রী।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) নাছিমুল করিম হলি জানান, ১৯৯৪ সালে বাবার অমতে চায়নাকে বিয়ে করে গোলাপ। শেরপুরের মির্জাপুরে বাস করছিলেন। সম্পর্কের বনিবনা না হওয়ায় বিয়ের এক বছর পর বিচ্ছেদও হয়। কিন্তু তালাক হলেও চায়না ও গোলাপের মধ্যে যোগাযোগ ছিল। এ বিষয়টি নিয়ে গোলাপের সঙ্গে তার পরিবার চাপ সৃষ্টি করছিল। বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল। এসব কারণে গোলাপ চায়নার সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে বিচ্ছিন্ন করতে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ রাতে উপজেলার পালশান গ্রামে চায়নাকে ডেকে নিয়ে আসে গোলাপ। এ সময় গোলাপকে সহযোগীতা করার জন্য জিল্লুর ও ফরহাদ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে গল্প করার সুযোগে চায়নার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন তারা।

এরপর আসামীরা চায়নার মরদেহ ওই গ্রামের এক বাড়ির সেফটি ট্যাংকির ভিতরে লুকিয়ে রাখে। এ ঘটনার প্রায় দু সপ্তাহ পর গ্রামবাসী মরদেহ উদ্ধার হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে চায়নার পরিবার মরদেহ সনাক্ত করে। পরে সেদিনই তার ভাই হাফিজার রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন।
সেই মামলায় দু বছর পর জুন মাসে চার্জশিট দেয় পুলিশ। এরপর মামলায় দীর্ঘদিন ধরে শুনানি চলছিল। এর মাঝে মামলার আরেক আসামী গোলাপের বাবা জহুরুল হক মারা যান।

পরবর্তীতে আজ বুধবার মামলার তিন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও এপিপি নাছিমুল করিম হলি জানান, দীর্ঘদীন পর একজন গৃহবধূ ন্যায় বিচার পেয়েছেন। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।