পাশা মোস্তফা কামাল: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর এক জীবনসংগ্রামের মধ্য দিয়ে এ জাতিকে শৃঙ্খলমুক্ত করে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের স্বপ্নই ছিল একটি শিক্ষিত ও উন্নত জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। শিক্ষা ছাড়া কখনও কোনো জাতি উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করতে পারে না, এটা তিনি জানতেন এবং বিশ্বাস করতেন। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন ধাপের আন্দোলন-সংগ্রাম এবং স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে শিক্ষার উন্নয়নের জন্য তাঁর গৃহীত পদক্ষেপগুলো বিশ্লেষণ করলে এরকম চিত্রই ফুটে উঠবে। শিক্ষা নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাবনার ভিত্তিমূলে ছিল আধুনিক, গণমুখী, অসাম্প্রদায়িক ও সর্বজনীন শিক্ষা। বাঙালির শিক্ষার পথ রুদ্ধ করে দেয়ার জন্য পাকিস্তানিদের প্রথম পদক্ষেপ ছিল আমাদের মাতৃভাষার ওপর আঘাত। ১৯৪৮ সালে ভাষার প্রশ্নে পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের বিরোধের শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু বুঝতে পেরেছিলেন ভাষাকে ধ্বংস করে দেয়া মানে শিক্ষাকে ধ্বংস করে দেয়া। বাঙালি জাতিকে অশিক্ষিত করে রাখার পাকিস্তানি ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দিতে তিনি আন্দোলন সংগঠিত করতে থাকেন। পাকিস্তানি শাসকদের দীর্ঘ অনিয়ম, শোষণ ও বঞ্চনার হাত থেকে বাঙালি জাতিকে মুক্ত করতে তিনি সোচ্চার হয়েছিলেন সবার আগে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শিক্ষার প্রতি বিশেষ মনোযোগ এবং গুরুত্ব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সংগঠিত করা শুরুই করেছিলেন তিনি। তখন থেকেই বঙ্গবন্ধু শুধু স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নই দেখেননি, তিনি একটি উন্নত-সমৃদ্ধ-সুখী বাংলাদেশ, তাঁর কথায়, ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্নও দেখেছিলেন। তিনি বলতেন, ‘সোনার বাংলা গড়তে হলে সোনার মানুষ চাই।’ অর্থাৎ দক্ষ, যোগ্য, অসাম্প্রদায়িক, দেশপ্রেমিক, আধুনিক ও শিক্ষিত সন্তান বা মানবসম্পদ। আর তা সৃষ্টির জন্য থাকা চাই সত্যিকার মানুষ গড়ার শিক্ষা বা সুশিক্ষা।
পাকিস্তানি শাসনামলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালির জাতীয় মুক্তির সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালিদের জন্য একটি গণতান্ত্রিক, মানবকল্যাণকর্মী, অসাম্প্রদায়িক জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। শাসকগোষ্ঠীর ঔপনিবেশিক ধাঁচের প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষানীতিবিরোধী বাংলার ছাত্রসমাজের শিক্ষা আন্দোলন জাতীয় মুক্তির বৃহত্তর আন্দোলনের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত হয়েছিল। ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা সম্মেলনে গৃহীত খসড়া মেনিফেস্টোতে বলা হয়েছিল, ‘রাষ্ট্রের প্রত্যেকের শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করিতে হইবে। শিক্ষাব্যবস্থা রাষ্ট্রের হাতে থাকিবে এবং প্রত্যেক নারী-পুরুষের পক্ষে শিক্ষা বাধ্যতামূলক করিতে হইবে। প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক থাকিবে। দেশের সর্বত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত করিয়া শিক্ষা সহজলভ্য করিতে হইবে। উচ্চতর শিক্ষা বিশেষ করিয়া কারিগরি শিক্ষার জন্য প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন শিক্ষাকেন্দ্র খুলিতে হইবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে সরকারি বৃত্তির সাহায্যে উচ্চতর শিক্ষা উৎসাহিত করিতে হইবে। মাতৃভাষাকে শিক্ষার বাহন করিতে হইবে।’
১৯৫৩ সালের নভেম্বরে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে সর্বজনীন শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবি জোরালোভাবে উত্থাপিত হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগের ১৯৫৪ সালের গঠনতন্ত্রে ‘নীতি ও উদ্দেশ্য’ হিসেবে ঘোষণা করা হয় ‘জাতি-ধর্র্ম নির্বিশেষে সব পাকিস্তানি নাগরিকের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, শিক্ষাবিষয়ক ও অর্থনৈতিক উন্নতি বিধান করা। সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার খাদ্য, বাসস্থান, বস্ত্র, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ন্যায়সংগত উপার্জনের ব্যবস্থা করা।’
১৯৫৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্টে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের শিক্ষানীতির পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘শিক্ষার ক্ষেত্রে যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা কর্মসূচিতে সুস্পষ্ট নির্দেশ আছে। আজ পর্যন্ত মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার প্রচলন হয়নি, কচি ছেলেমেয়েদের স্কন্ধে আজও তিন-চারটি বিদেশি ভাষা বাধ্যতামূলকভাবে চেপে রয়েছে। স্কুল -কলেজের উন্নতির কোনো প্রচেষ্টাই নেই। ছাত্রদের বেতন হ্রাস ও আবাসস্থলের ব্যবস্থা করার কোনো ইচ্ছা সরকারের দেখা যাচ্ছে না।’ ওপরের আলোচনা বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয়, পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন তখন আস্তে আস্তে ঘনীভূত হতে থাকে, তার ভেতরে শাসনকাঠামো পরিবর্তনের বিষয়টির সঙ্গে সঙ্গে যে বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে তা হলো সর্বজনীন শিক্ষার প্রসার। বঙ্গবন্ধু এই আন্দোলনের পুরোভাগে শিক্ষার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে প্রাধান্য দিয়েছেন। ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনেও তার প্রতিফলন দেখা যায়। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের প্রতিটি ধাপে বঙ্গবন্ধু দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছেন, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের ইতিহাসে ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন একটি অন্যতম মাইলফলক।
১৯৭০ সালে ছয় দফা দাবিকে সামনে রেখে নির্বাচনে নামেন বঙ্গবন্ধু। বলা হয়ে থাকে, ছয় দফার পক্ষে ম্যান্ডেট গ্রহণ করার জন্যই তিনি নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সেই নির্বাচন উপলক্ষে দেশবাসীর উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর দেয়া বেতার-টেলিভিশন ভাষণ থেকে তাঁর শিক্ষা-ভাবনা সম্বন্ধে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যায়। ভাষণে তিনি বলেছিলেন, ‘সুষ্ঠু সমাজব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য শিক্ষা খাতে পুঁজি বিনিয়োগের চাইতে উৎকৃষ্ট বিনিয়োগ আর কিছু হতে পারে না।… নিরক্ষরতা অবশ্যই দূর করতে হবে। পাঁচ বছর বয়স্ক শিশুদের বাধ্যতামূলক অবৈতনিক প্রাথমিক শিক্ষাদানের জন্য একটা ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ চালু করতে হবে। মাধ্যমিক শিক্ষার দ্বার সব শ্রেণির জন্য খোলা রাখতে হবে। দ্রুত মেডিকেল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়সহ নয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দারিদ্র্য যাতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে মেধাবী ছাত্রদের জন্য অভিশাপ হয়ে না দাঁড়ায়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের প্রথম বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধনকালে বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে শিক্ষার উদ্দেশ্য ও নারী শিক্ষা সম্পর্কে বলেন, ‘শতকরা ২০ জন শিক্ষিতের দেশে নারীর সংখ্যা আরও নগণ্য।… ক, খ, শিখলেই শিক্ষিত হয় না, সত্যিকারের আলোকপ্রাপ্ত হইতে হইবে।’ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন সরকার সংবিধানে শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করেন এবং প্রত্যেক নাগরিকের জন্য শিক্ষাপ্রাপ্তির নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়। সংবিধানের ১৭ অনুচ্ছেদের (ক)-তে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র একই পদ্ধতির গণমুখী ও সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য এবং আইনের দ্বারা নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সব বালক-বালিকাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।’
১৯৭২ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণের মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ২৬ জুলাই বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ড. কুদরাত-এ-খুদার নেতৃত্বে বাংলাদেশ শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। কুদরাত-এ-খুদা কমিশন দেড় বছর কঠোর পরিশ্রম করে ১৯৭৪ সালের ৩০ মে বাংলাদেশের শিক্ষা সংস্কারের একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সরকারের কাছে দাখিল করে। কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষানীতি ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ বঙ্গবন্ধুই নিয়েছিলেন।
ডিসেম্বর ’৭১ পর্যন্ত সময়কালে বঙ্গবন্ধু ছাত্রদের সব বকেয়া টিউশন ফি মওকুফ করেন; শিক্ষকদের ৯ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করেন; আর্থিক সংকট থাকা সত্ত্বেও পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীকে বিনা মূল্যে পুস্তক বিতরণ করেন এবং অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী পদক্ষেপ হচ্ছে তিনি দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করেন। এর ফলে এক লাখ ৬৫ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি সরকারি হয়। বঙ্গবন্ধুর সরকার ৯০০ কলেজ ভবন ও ৪০০ হাই স্কুল পুনর্নির্মাণ করেন। বঙ্গবন্ধুর আরেকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হচ্ছে জাতীয় সংসদে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস করার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বায়ত্তশাসন প্রদান। এ থেকে শিক্ষা বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাবনাগুলোর স্বরূপ নির্ণয় করা যেতে পারে। এ বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বাগ্রে যে কথাটি বলতে হয়, তা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শিক্ষাকে মৌলিক অধিকারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অপরিহার্য মৌলিক অধিকার হিসেবে মনে করতেন। তিনি মনে করতেন, একটি সুষ্ঠু দেশ-জাতি-সমাজ গড়ার জন্য শিক্ষা অপরিহার্য। শিক্ষাকে কোনো শ্রেণির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে একে সর্বজনীন করে দেয়ার জন্য তাঁর প্রচেষ্টা ছিল লক্ষণীয়। তিনি মনে করতেন শিক্ষা হবে অভিন্ন, গণমুখী ও সর্বজনীন বা সবার জন্য শিক্ষা। নারী শিক্ষার ওপর যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করেছেন তিনি। তিনি মনে করতেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে ব্যয় ভবিষ্যতের জন্য শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ। তাঁর ভাবনায় ছিল কেউ নিরক্ষর থাকবে না, সবাই হবে সাক্ষর; নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করতে হবে। নির্দিষ্ট শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা হবে অবৈতনিক ও সবার জন্য বাধ্যতামূলক। পাঁচ বছর বয়সি সব শিশুর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গমন নিশ্চিত করতে ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’ গ্রহণ করতে হবে। স্বাধীন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হবে সমাজ চাহিদা ও জাতীয় প্রয়োজন পূরণে সক্ষম আলোকিত মানুষ তৈরি করা। সবার জন্য অন্তত মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার দ্বার উম্মুক্ত রাখা। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা; মেডিকেল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ। অর্থাভাবে কোনো শিক্ষার্থীর শিক্ষালাভ যাতে ব্যাহত না হয়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে মেধার লালন ও পৃষ্ঠপোষকতা দান করা। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষাকে শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি মনে করতেন, যার কারণে তিনি একসঙ্গে এক লাখ ৬৫ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি সরকারিকরণ করেছিলেন এবং একই সঙ্গে ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের ঘোষণা দিয়ে জাতিকে অবাক করে দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধু অনুভব করেছিলেন, দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, উন্নয়নের জন্য এবং সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো শিক্ষা। বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় শিক্ষার ভিত মজবুত করা সম্ভব হবে না। টোল, মক্তব, মাদরাসা, পাঠশালার শিক্ষা, ব্রিটিশ ভারত ও পাকিস্তানের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। এটি ছিল একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। সদ্য স্বাধীন একটি দেশে আর্থসামাজিক সাংস্কৃতিক টানাপড়েনের মধ্যে এত বড় ব্যয় সংকুলান করে প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করা ছিল একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তিনি দেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে গেছেন। উচ্চশিক্ষার উন্নয়নেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন গঠন করে গেছেন। শিক্ষার উন্নয়নের মাধ্যমে একটি আধুনিক, শিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠন করার মহৎ প্রত্যয় ছিল বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের সেরা স্তম্ভ।
পিআইডি নিবন্ধন