প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল: চাঁদার দাবিতে এক ট্রাকশ্রমিককে পুলিশের মারধরের ঘটনায় দুই ঘণ্টা ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন পরিবহন শ্রমিকরা। এতে গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে মহাসড়কে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।
পরিবহন শ্রমিকরা জানান, গতকাল ভোরে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব গোলচত্বর এলাকায় সেতু পূর্ব থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নূরে আলমের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী ট্রাকের চালক বকুল মিঞার কাছে এসআই নূরে আলম ৫০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু বকুল টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই পুলিশ সদস্য তাকে মারধর করেন। এতে বকুলের চোখের নিচে ফেটে রক্তক্ষরণ হয়। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে সকাল ৮টার দিকে সেতু পূর্ব এলাকায় মহাসড়কে এলোপাতাড়ি ট্রাক ও বাস রেখে অবরোধ করে পরিবহন চালক ও শ্রমিকরা। এতে বন্ধ হয়ে যায় সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল। সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) শরীফুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহাদুজ্জামান মিঞা, কালিহাতী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান মনির এবং টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বালা মিঞাসহ শ্রমিক সংগঠনের নেতারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সকাল ১০টার দিকে অভিযুক্ত এসআইকে প্রত্যাহার করে নিলে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।
আহত ট্রাকচালক বকুল মিঞা জানান, প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র থাকার পরও এসআই নূরে আলম তার কাছে ৫০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে না চাইলে গাড়ি থেকে কলার ধরে নামিয়ে পেটাতে থাকেন।
টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বালা মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্ত এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত এবং আহত ট্রাকচালকের সব চিকিৎসার ব্যয়ভার পুলিশ বহন করায় শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন। পরে সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহাদুজ্জামান মিঞা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, এসআই নূরে আলমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হবে। ওই ট্রাকচালকের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করার ঘোষণা দিয়ে তিনি আরও জানান, টাঙ্গাইল জেলার সীমানায় কোনো পুলিশ সদস্য আর কখনোই চাঁদাবাজি ও পরিবহন শ্রমিকদের হয়রানি করতে পারবে না। এরপরও যদি কোনো সদস্য এমন ঘটনা ঘটায়, তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।