বন্ধ হচ্ছে এইচএসবিসির ১১৭ শাখা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ব্রিটেনভিত্তিক বহুজাতিক ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি) দেশটিতে ১১৭টি শাখা বন্ধ করার  ঘোষণা দিয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন শাখা থেকে ৩৮০ জন বিশেষজ্ঞ কর্মী ছাঁটাই করবে ব্যাংকটি। খবর বিবিসি।

প্রতিবেদন মতে, ব্যয় সংকোচনের অংশ হিসেবেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংকটি।

ব্যাংকটির ছাঁটাইর তালিকায় থাকা মোট ৩৮০ কর্মীর মধ্যে পুনর্গঠন কর্মসূচির আওতায় ব্রিটেনে ১৮০ এবং ভারত, চীন ও  পোল্যান্ডের বিভিন্ন শাখা থেকে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের মধ্যে থেকে ২০০ জনকে ছাঁটাই করা হবে।

ব্যাংকটি বলছে, ওইসব পদে তুলনামূলক কম বেতনে স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দেওয়া হবে।

এদিকে ব্যাংকটির কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ট্রেড ইউনিয়নগুলো। ইউনাইটেড ইউনিয়নের জাতীয় পর্যায়ের নেতা ডমিনিক হুক এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এইচএসবিসির শত শত কর্মীর জন্য এটি একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন দিন।

এছাড়া ব্যাংকটির শতাধিক শাখা বন্ধের সিদ্ধান্ত কর্মীদের পাশাপাশি গ্রাহকদেরও ভোগান্তিতে ফেলবে বলে মন্তব্য করেন ডমিনিক হুক।

তবে এইচএসবিসি বলছে, বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া ওইসব শাখায় গত পাঁচ বছরে লেনদেন ৪০ শতাংশের বেশি কমেছে। বিপরীতে মানুষ এখন ডিজিটাল লেনদেনে বেশি অভ্যস্ত হয়ে উঠছে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে শাখা বন্ধ করে দেওয়া হলে স্বল্প আয়ের গ্রাহকদের জন্য তা বড় আঘাত হিসেবে আসতে পারে।

পরিসংখ্যান মতে, ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ব্যাংকটি বিশ্বজুড়ে ৩২১টা শাখা বন্ধ করেছে। ব্রিটেনের আর কোনো ব্যাংক এ সময় এত বেশি শাখা বন্ধ করেনি।

এছাড়া ব্যাংকটি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০১৬ সাল শেষে দেশটিতে এইচএসবিসি ব্যাংকের ৯৬৫টি শাখা থাকলেও ২০১৭ সালের  শেষ নাগাদ তা ৬২৫টিতে নেমে আসবে।

এর আগে এইচএসবিসি লন্ডন থেকে এক হাজার কর্মী সরিয়ে প্যারিসে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে যাওয়া বা ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নেওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট গালিভার জানিয়েছেন।

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্বঅর্থনীতি ফোরামের সম্মেলনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গালিভার বলেন, লন্ডন থেকে প্যারিসে যাদের কর্মস্থল পরিবর্তন হচ্ছে, তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ইতোমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। ব্যাংকের প্রয়োজনেই এ ধরনের কর্মস্থল স্থানান্তরের ঘটনা ঘটছে। ফ্রান্স ইউরোপে আগামী দিনে অর্থনৈতিক দিক থেকে এগিয়ে থাকবে বলেই ধারণা করছেন গালিভার।

তিনি আরও বলেন, ফ্রান্সে এইসএসবিসি বাণিজ্য ঋণ দিতে শুরু করে ২০০২ সাল থেকে। এখন পুরোমাত্রায় ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করতে এ কর্মপরিধি বাড়ানো হচ্ছে। লন্ডনে ব্যবসার সফলতার নিরিখেও এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। ব্রিটেনে নাগরিক অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা আর্থিক খাতে ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে এবং এ কারণেই ব্যবসা সরিয়ে নিচ্ছে এইসএসবিসি