বন্য হাতি রক্ষায় জাবিতে পাপেট শো

প্রতিনিধি, জাবি: দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যহাতি হত্যার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মানববন্ধন ও সচেতনতামূলক পাপেট শো অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল দুপুরে ‘ডিপ ইকোলজি অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ’ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ মানববন্ধন হয়। এতে সংগঠনটির অর্ধশতাধিক সদস্য অংশ নেন।

মানববন্ধনে হাতি হত্যার প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এ সময় ‘হাতির করিডোর দখলমুক্ত কর’, ‘নির্বিচারে হাতি হত্যা আর নয়’, ‘হাতির নিরাপদ বাসস্থান চাই’, ‘ভালো থাকুক মানুষ- ভালো থাকুক প্রকৃতির সন্তানেরা’ প্রভৃতি প্ল্যাকার্ড ধারণ করতে দেখা গেছে।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে ডিইএসআরএফের সভাপতি মাহফুজুর রহমান বলেন, একটি হাতিকে প্রজননক্ষম হতে আট বছর লাগে এবং বাচ্চা প্রসব করতে ২২ মাস লাগে। অথচ দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্য হাতি হত্যা করা হচ্ছে। গত কয়েকদিনে প্রায় পাঁচটি মৃত হাতি শনাক্ত করা হয়েছে। দেশে এখন হাতির সংখ্যা আড়াইশোর বেশি হবে। এ রকম একটি বিপন্ন প্রজাতিকে এভাবে নির্যাতন করতে থাকলে কয়েকদিন পর আর জীবন্ত হাতি খুঁজে পাওয়া যাবে না। যদি আমরা চাই আমাদের পরবর্তী প্রজš§ হাতি দেখুক, বাংলাদেশের ইকোসিস্টেম সুস্থ থাকুক, তাহলে এখন থেকেই সচেতন হতে হবে। শুধু নিজেরা সচেতন হলে হবে না অন্যদের সচেতন করতে হবে।

এ সময় কাকতারুয়া পাপেট থিয়েটার সচেতনামূলক পাপেট প্রদর্শনী করে। এতে হাতি রক্ষায় এগিয়ে আসা ও হাতির প্রতি সহানুভূতিশীল হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

পাপেট প্রদর্শনী শেষে কাকতাড়–য়া পাপেট থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান আশিক বলেন, আমরা গল্পের মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছি, আমরা বনভূমি ধ্বংস করছি, বনের খাবার নষ্ট করছি। ফলে হাতি

লোকালয়ে চলে আসছে। পরে আমরাই আবার সেই হাতিকে মারছি যা পরিবেশের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। কাকতাড়–য়া পাপেট থিয়েটারের উদ্যোগে জনসচেতনতা তৈরিতে পাপেট প্রদর্শনীসহ নানা কর্মসূচি আয়োজন করছি।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, গত এক সপ্তাহে প্রায় পাঁচটি মৃত হাতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর প্রতিটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। সোজা কথায়, মানুষ তাদের হত্যা করেছে। এটি খুব আশঙ্কাজনক একটি সংবাদ। এখনই সচেতন না হলে শিগগির আমাদের দুঃস্বপ্ন দেখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ডিপ ইকোলজির এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সর্বস্তরের সচেতনতার

পাশাপাশি দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আশা করি, ডিপ ইকোলজির মতো সবাই এগিয়ে আসবেন।