Print Date & Time : 6 September 2025 Saturday 6:21 pm

বর্ষা ও বন্যায় ছত্রাকজনিত রোগে করণীয়

বছরের এই সময়টায় বৃষ্টি হলেও অনেক জায়গায় গরমের তীব্রতা কমেনি। এর মধ্যেই অনেক জায়গায় দেখা দিয়েছে বন্যা। ত্বক ভেজা থাকলে সহজেই ছত্রাক ও ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে। বর্ষা মৌসুমে প্রধানত দাদ, ছুলি ও ক্যানডিডিয়াসিসÑএই তিন ধরনের ছত্রাকজনিত রোগ হতে দেখা যায়। ছত্রাকের সংক্রমণ সাধারণত ত্বকের বাইরের অংশে দেখা যায়। স্যাঁতসেঁতে ও নোংরা পরিবেশে বসবাস এবং শরীর ঘর্মাক্ত থাকলে দ্রুত সংক্রমণ ঘটে। দাদ শরীরের যেকোনো জায়গায় হতে পারে। তবে সাধারণত পেট, পেটের নিচের অংশ, কোমর, কুঁচকি, পিঠ, মাথায় সংক্রমণ বেশি হতে দেখা যায়।

ছুলি ও শ্বেতী এক নয়: টিনিয়া ভারসিকলার বা ছুলিও ছত্রাকের সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। বর্ষা মৌসুমে গরম বেশি পড়লে মানুষের ঘাড় ঘামতে থাকে। ফলে সেখানে ছুলি হতে পারে। ছুলি হলে শরীরে হালকা বাদামি ও সাদা ছোট ছোট গোল আকারের ফুসকুড়ি হয়। ঘাড় ছাড়াও এর সংক্রমণ বুক, গলার দুই পাশ, পিঠ, বগলের নিচে, এমনকি পুরো শরীরে হতে পারে। এ সময় ত্বকের রং অনেকটা সাদাটে হয়ে যায়। এ ছাড়া যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলকভাবে কম (বিশেষত শিশু, বয়স্ক ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি), ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি, সন্তানসম্ভবা নারী, দীর্ঘদিন ধরে যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেন তাদের চর্মরোগ ক্যানডিডিয়াসিস হতে পারে। তবে যাদের শরীরে ঘাম বেশি হয় কিংবা বেশি বেশি পানি স্পর্শ করতে হয়, তাদের এ রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এমন ব্যক্তিদের আঙুলের ফাঁকে, হাতের ভাঁজে, শিশুদের জিহ্বা, নারীদের যোনিপথে এ রোগ হতে পারে। আক্রান্ত স্থান লালচে হয়ে যায়। সঙ্গে চুলকানি হয়ে থাকে।

যা করতে হবে: ছত্রাকজনিত চর্মরোগে আক্রান্ত হলে উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই। কেননা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব সংক্রমণ শতভাগ নিরাময় করা সম্ভব। তবে বারবার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। তাই ছত্রাক বেড়ে ওঠার ও সংক্রমণ সৃষ্টির পরিবেশে থাকা যাবে না। এতে বারবার সংক্রমিত হতে পারেন।

সংক্রমণ প্রতিরোধে পা ও হাত, আঙুলের ফাঁক, নখের গোড়া সাবান দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। ত্বক পরিষ্কার বা ধোয়ার পর শুকনা তোয়ালে কিংবা গামছা দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। কাপড়, বালিশ, তোয়ালে, গামছা ভালো করে রোদে শুকিয়ে রাখতে হবে। এরপরও ত্বকে কোনো সমস্যা দেখা দিলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. জাহেদ পারভেজ, সহকারী অধ্যাপক, চর্ম, যৌন ও অ্যালার্জি রোগ বিভাগ, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা